ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণায় উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে তিনি জানিয়ে দেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অন্তত ৫০টি আসনে তিনি প্রার্থী দিতে চান। এই ঘোষণার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা, বিতর্ক এবং কড়া প্রতিক্রিয়া (Dilip Ghosh)।
বিষয়টি ঘিরে মুখ খুলেছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তাঁর মতে, হুমায়ুন কবীরের দল গঠনের পেছনে রয়েছে গভীর রাজনৈতিক অভিসন্ধি এবং তা কোনও ‘আকস্মিক’ পদক্ষেপ নয়। দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) বলেন, “ওঁকে কেউ কোনওদিন ধরে রাখতে পারেনি। কংগ্রেস করেছেন, বিজেপি থেকেও দাঁড়িয়েছেন, এখন তৃণমূল করছেন। পশ্চিমবঙ্গে যত দল আছে, প্রায় সবই করে ফেলেছেন তিনি। তাই এবার নিজেই একটা দল বানাচ্ছেন।”
এখানেই থামেননি দিলীপ (Dilip Ghosh)। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, হুমায়ুন কবীরের এই সিদ্ধান্ত আসলে তৃণমূলের ‘পরিকল্পিত চাল’। তিনি বলেন, “যেসব মুসলিম নেতা এতদিন মুখ খুলছিলেন, নানা বিতর্কিত মন্তব্য করছিলেন, তা শুধু তাঁদের ব্যক্তিগত মত নয়, বরং তা তৃণমূলের প্রশ্রয়প্রাপ্ত। আগামী নির্বাচনে যদি উপমুখ্যমন্ত্রীর দাবি ওঠে মুসলিম সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে, অবাক হওয়ার কিছু নেই।”
তিনি (Dilip Ghosh) আরও বলেন, “রাজ্যে যদি মুসলিমদের নতুন দল হয় এবং তারা ১০০টি সিটে জয় পায়, তাহলে তারা নিজেদের শক্তি দেখিয়ে বলবে— যে দল মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মুসলিমকে তুলে ধরবে, আমরাই তাকে সমর্থন করব। সব কিছু পরিকল্পনা করেই এগোচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ সব জানেন এবং মদত দিচ্ছেন।”
দিলীপ ঘোষ রাজ্যের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও ভয়াবহ রূপে ব্যাখ্যা করে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ দ্বিতীয় বাংলাদেশে পরিণত হচ্ছে। দেশভাগের আগের মত পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। একসময় বামপন্থীরা এই রাস্তা তৈরি করেছিল, আর এখন সেই রাস্তা ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এগিয়ে চলেছেন।”
ভোট ভাগাভাগির জেরে বিজেপির সুবিধা হতে পারে কি না, সে প্রশ্নে দিলীপ ঘোষ স্পষ্ট জানান, “বিজেপি ভাগাভাগির রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। আমরা ভারতীয় সংবিধানের ভিত্তিতেই রাজনীতি করি। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এই আমাদের নীতি।”
তাঁর দল ছাড়ার জল্পনা প্রসঙ্গে তিনি পরিষ্কার ভাষায় বলেন, “আমি আজও বিজেপিতেই আছি, থাকব। গোটা রাজ্যের কর্মীদের সঙ্গেই রয়েছি।”