ডেটিং অ্যাপে বন্ধুত্বের নামে প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেলের ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে কলকাতা ও আশপাশের জেলাগুলিতে। একের পর এক ঘটনায় বহু মানুষ বিপুল অঙ্কের টাকা খুইয়েছেন বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে বিশেষভাবে সতর্ক করে বার্তা দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের স্পষ্ট পরামর্শ, অনলাইনে পরিচিত স্বল্প সময়ের ‘বান্ধবী’র সঙ্গে কোনও অবস্থাতেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য, ওটিপি, ব্যক্তিগত নথি কিংবা নিজের পারিবারিক ও আর্থিক অবস্থার বিস্তারিত তথ্য ভাগ করা যাবে না (Kolkata Police)।
পুলিশের বক্তব্য, ডেটিং অ্যাপে পরিচয়ের পর সকলেই যে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই সত্যিকারের বন্ধুত্ব বা সম্পর্কও তৈরি হচ্ছে (Kolkata Police)। তবে এর পাশাপাশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক প্রতারণা চক্র। এই সব চক্রে যেমন মহিলারা রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন পুরুষরাও। তাঁরা প্রথমে বন্ধুত্ব গড়ে তুলে বিশ্বাস অর্জন করেন, তারপর ধীরে ধীরে শুরু হয় টাকার দাবি, ব্ল্যাকমেল ও ভয় দেখানো।
সম্প্রতি শহরের কসবা এলাকার একটি হোটেলে চাঞ্চল্যকর এক খুনের ঘটনার তদন্তে এই ডেটিং অ্যাপ চক্রের নাম উঠে আসে। ওই ঘটনায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট আদর্শ লোসালকর-কে পা বেঁধে গলায় বেডশিট পেঁচিয়ে খুন করা হয়। তদন্তে জানা যায়, এই খুনের অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি কোমল সাহা ও ধ্রুব মিত্র ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমেই ‘ক্লায়েন্ট’ বেছে নিতেন। সম্পর্কের ফাঁদ পেতে টাকা আদায় ও ব্ল্যাকমেলই ছিল তাঁদের মূল উদ্দেশ্য।
গত কয়েক মাসে কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে, যেখানে দেখা গিয়েছে—ডেটিং অ্যাপে আলাপ, তারপর ঘনিষ্ঠতা, এর পরেই ধাপে ধাপে টাকা তোলার চেষ্টা এবং শেষে ব্ল্যাকমেল। অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা সামাজিক লজ্জা ও ভয়েই আগে অভিযোগ করতে চাননি। ফলে সাহস পেয়ে যাচ্ছে প্রতারকরা।
এই পরিস্থিতিতে কলকাতা পুলিশ আবারও সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছে। পুলিশের কথায়, অনলাইনে পরিচিত কারও সঙ্গে কখনওই আর্থিক লেনদেন করা উচিত নয়, ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও শেয়ার করাও বিপজ্জনক হতে পারে। সামান্য অসতর্কতাই জীবনের বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছে পুলিশ।













