রাজ্য রাজনীতি আবারও তপ্ত হয়ে উঠল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক মন্তব্যকে ঘিরে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের (CV Ananda Bose) বিরুদ্ধে ‘রাজভবনে বোমা-বন্দুক মজুত’ থাকার অভিযোগ তুলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ। সেই মন্তব্য ঘিরেই শুরু নতুন বিতর্ক। আর সেই বিতর্ক এখন পৌঁছে গেল থানায়। রাজভবনের তরফেই হেয়ার স্ট্রিট থানায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে (CV Ananda Bose)। অভিযোগে বলা হয়েছে, সাংসদ উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন, জনমনে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে এবং রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের (CV Ananda Bose) বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগ রুজু হয়েছে ভারতের নতুন ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায়।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগকে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, “চিঠি পাঠানো মানেই FIR নয়। আমি আইন (CV Ananda Bose) বেশি জানি। ও যা ইচ্ছে করুক। ওর মতো হাজার CV Ananda Bose দেখেছি। ফালতু লোক, থার্ড-গ্রেডেড লোক।” তাঁর এই মন্তব্যে আরও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
তৃণমূল সাংসদের অভিযোগ ছিল, রাজ্যপাল নাকি রাজভবনে বিজেপির ‘ক্রিমিনালদের’ আশ্রয় দিয়ে তাঁদের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছেন। এই বিস্ফোরক দাবি সামনে আসতেই রাজভবন পাল্টা ঘোষণা করে জানায়—সোমবার ভোর থেকেই রাজভবন সাধারণ মানুষের জন্য খুলে রাখা হবে, সাংবাদিক, সাংসদ সবাই নিজের চোখে এসে দেখে যেতে পারবেন আদৌ কোনও অস্ত্র বা বিস্ফোরক রয়েছে কি না। এরপরই বম্ব স্কোয়াড, CISF ও রাজ্য পুলিশের যৌথ দল সোমবার রাজভবনে তল্লাশি চালায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তল্লাশির পর কোথাও কোনও অস্ত্র বা বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি।
তল্লাশি অভিযানের পর রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কড়া বার্তা দেন। তিনি বলেন, “বাংলায় একটা প্রবণতা তৈরি হয়েছে—রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কিছু বললেই কিছু হবে না। কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভুয়ো অভিযোগ করলে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।” তাঁর এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট, কল্যাণের মন্তব্যকে তিনি মোটেই সাধারণ রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবে দেখছেন না।
রাজভবনের মতে, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য সরাসরি সশস্ত্র বিদ্রোহ উস্কে দিতে পারে। তাই BNS-এর ১৫১, ১৫২, ১৯৭, ১৯৬(১)(এ), ১৫৩(১)(বি), ১৫৩(১)(সি), ১৫৩(২) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। অন্যদিকে তৃণমূল এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই দাবি করছে।
পুরো ঘটনাটি ঘিরে এখন নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক শিবিরে জোর জল্পনা—এ কি শুধু মন্তব্যের লড়াই, নাকি পর্দার আড়ালে আরও গভীর কোনও রাজনৈতিক সংঘাত চলছে? কল্যাণ কি সত্যিই কোনও গোপন তথ্যের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন? নাকি রাজনৈতিক চাপ বাড়াতেই এমন মন্তব্য করেছিলেন? আর রাজভবনের পাল্টা পদক্ষেপ কি নতুন রাজনৈতিক টানাপোড়েনের ইঙ্গিত? সব প্রশ্নেই এখন উত্তেজনা চরমে।










