ওবিসি তালিকা নিয়ে রাজ্য সরকার ও আদালতের মধ্যে আবারও শুরু হল টানাপোড়েন (Calcutta High Court)। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রাজ্য সরকার নতুন ওবিসি তালিকা প্রকাশ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই তড়িঘড়ি তালিকা প্রকাশ নিয়েই সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে উঠল মামলা। ওই তালিকার উপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি মঙ্গলবার (Calcutta High Court)।
সোমবার এই বিষয়ে শুনানির সময় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে কড়া প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, যদি কোনও সিদ্ধান্ত বিধানসভায় বিল পাস করে নেওয়া হয়, তাহলে আদালতের (Calcutta High Court) বলার কিছু নেই। কিন্তু এখানে অভিযোগ হচ্ছে, রাজ্য প্রশাসনিকভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি করে একতরফা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বিচারপতির মন্তব্য, “রাজ্য যদি নিজের মর্জি অনুযায়ী কাজ করে, তাহলে আদালতের তো প্রশ্ন তুলতেই হবে।”
এই বিতর্কের মধ্যে রয়েছে কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত ইস্যুও। অভিযোগ উঠেছিল, নতুন ওবিসি তালিকা (Calcutta High Court) না এলে কলেজে ভর্তি করা যাবে না। যদিও এই দাবি নস্যাৎ করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আদালতও জানিয়ে দেয়, ভর্তি বা নিয়োগ কোথাও বন্ধ রাখার নির্দেশ আদালত দেয়নি।
বিচারপতি মান্থা আরও বলেন, “গত ১৫-২০ বছর ধরে যাঁরা অনৈতিকভাবে ওবিসি সুবিধা পাচ্ছিলেন, তাঁদের বাদ দিয়েছে আদালত। তাঁরা তো এখন রাস্তায় বসে নেই! অথচ অভিযোগ, রাজ্য আবার তাঁদেরই ওবিসি তালিকায় ফেরত আনতে চাইছে। এই অভিযোগ আদালতকে খতিয়ে দেখতে হবে।”
আদালতের (Calcutta High Court) প্রশ্ন ছিল আরও স্পষ্ট— “আমরা বলেছিলাম, সঠিকভাবে সমীক্ষা করে ওবিসি তালিকা তৈরি করতে। সেই সমীক্ষা ঠিকমতো হয়েছে কিনা, তা আমরা দেখব। কিন্তু রাজ্য যদি একের পর এক বিজ্ঞপ্তি জারি করতে থাকে, তাহলে এই মামলার আর গুরুত্ব কোথায় থাকে?”

তিনি আরও বলেন, রাজ্য চাইলে নতুন তালিকায় ৬৬টি সম্প্রদায়ের নাম রাখতে পারে। আদালত বাধা দিচ্ছে না। কিন্তু সেই পথে না হেঁটে নিজের মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য জটিলতা তৈরি করছে। আদালতের নির্দেশ মানতে রাজ্যের এই অনীহা কেন— সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, গত বছর কলকাতা হাইকোর্ট ২০১০ সাল থেকে ৭৭টি সম্প্রদায়কে দেওয়া ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করে দেয়। প্রায় ১২ লক্ষ শংসাপত্র সেই সময় বাতিল হয়। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে যায়। সেখানে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, নতুন করে ওবিসি তালিকা তৈরি করতে সমীক্ষা শুরু হয়েছে, সময় লাগবে তিন মাস। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের আবেদন মেনে জুলাই মাসে পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেছে।
তবে এই তিন মাস সময় চাওয়া ও নতুন সমীক্ষা নিয়েও ফের কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়। সেই মামলার শুনানি ছিল সোমবার, এবং মঙ্গলবার ফের তার শুনানি হবে।