স্বামী, সংসার আর একমাত্র সন্তানকে ছেড়ে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন এক মহিলা। ছোট্ট ছেলেটিকে রেখে চলে গিয়েছিলেন পিতৃগৃহে। সময় পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ ১৫ বছর। সেই ছেলেটি এখন নাবিক। মা-ছেলের সম্পর্ক রয়ে গেছে কেবল রক্তের বাঁধনে—আন্তরিকতার কোনও চিহ্ন নেই (Calcutta high Court)।
সেই মা-ই এবার অসহায় বৃদ্ধা। শরীরে বাসা বেঁধেছে একের পর এক রোগ, জীবনের শেষবেলায় ঠাঁই নিয়েছেন এক বৃদ্ধাশ্রমে। স্বামী আগেই বিচ্ছেদে পৃথক, তাই সাহায্য করার মতো কেউ নেই। শেষ ভরসা একমাত্র ছেলে। কিন্তু সেই ছেলে—অভিজ্ঞান, যিনি মায়ের মমতা ছাড়া মামার বাড়িতে বড় হয়েছেন, স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, মায়ের খোরপোষ দিতে তিনি রাজি নন (Calcutta high Court)।
এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta high Court) দ্বারস্থ হন মা ইন্দ্রাণী। খোরপোষের দাবি জানিয়ে শুরু হয় মা-ছেলের আইনি লড়াই। বিচারপতি (Calcutta high Court) অমৃতা সিনহা নির্দেশ দেন, ছেলেকে মায়ের দায়িত্ব নিতে হবে। ছেলেও পালটা জানায়, তিনি মাসে ১০ হাজার টাকার বেশি দেবেন না। তার যুক্তি, মা ১৫ বছর আগে তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। সেভাবে কোনো সম্পর্ক ছিল না, কোনও খোঁজখবরও রাখেননি।
শেষমেশ মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে হাইকোর্টে। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, কত টাকা মাকে দিতে হবে, তা নির্ধারণ করবেন সংশ্লিষ্ট মহকুমা শাসক।
শুধু আইনি লড়াই নয়, এই মামলায় উঠে এসেছে সম্পর্ক, মায়া, ছেড়ে যাওয়ার যন্ত্রণা এবং ক্ষমার জটিল মানসিক দ্বন্দ্ব।
ছেলের অভিমান ছিল—“জন্ম দিলেই কি মা হওয়া যায়?” তবু শেষ পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব স্বীকার করেছেন। হয়তো বাধ্য হয়েই, অথবা হয়তো আইনের কাছে নত হয়ে। তবুও—সেই মা-ই এখন তাঁর কাছে আবার এক আর্থিক দায়।