ফের রাজ্য প্রশাসনের উদ্দেশে তীব্র হুঁশিয়ারি হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। প্রকল্পের টাকা রিলিজে রাজ্যের ‘গাফিলতি’ নিয়ে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সোমবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির বেঞ্চে হাইকোর্ট (Calcutta High Court) ও নিম্ন আদালতের উন্নয়নমূলক কাজে টাকা আটকে থাকার মামলার শুনানি হয়। শুনানিতে বিস্ফোরক মন্তব্য বিচারপতি দেবাংশু বসাকের, “রাজ্যে কি আর্থিক জরুরি অবস্থা চলছে?”
অভিযোগ, গত তিন বছর ধরে আদালতের নানা প্রকল্পে বরাদ্দ অর্থ রাজ্য দেয়নি। বিএসএনএলের তিন বছরের বিল বাবদ ৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা বাকি, অথচ পেমেন্ট হয়নি। এমনকি হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নিজস্ব ৩৬টি উন্নয়ন প্রকল্পেও বরাদ্দ আটকে আছে। বিচারপতি দেবাংশু বসাক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মুখ্যসচিবকে বলুন, রাজ্যের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিতে হবে। আমরা সিজ করার নির্দেশ দেব। রিজার্ভ ব্যাঙ্কে রাজ্যের কনসোলিডেট ফান্ড রাখে না? সেই অ্যাকাউন্ট নম্বর দিন, অ্যাটাচ করে দেব। সব লেনদেন বন্ধ রাখুন তাহলে!”
রাজ্যের তরফে আদালতে (Calcutta High Court) জানানো হয়, ২.৯ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই অনুমোদন করা হয়েছে। কিন্তু আদালত প্রশ্ন তোলে— সেই টাকা এখনও পৌঁছয়নি কেন? বিচারপতি মন্তব্য করেন, “যদি হাইকোর্টের এই অবস্থা হয়, তাহলে নিম্ন আদালতগুলির কী অবস্থা হবে?” রাজ্যের মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবের ভূমিকা নিয়েও তীব্র প্রশ্ন তোলেন আদালত। বেঞ্চের কটাক্ষ, “হাইকোর্টের উন্নয়নমূলক কাজে টাকা বরাদ্দ করা কি প্রশাসনিক কাজের মধ্যে পড়ে না? তিন বছর ধরে বিল ঝুলে আছে— এটা কি শামুক আর কচ্ছপের দৌড়?”
রাজ্যের প্রতিনিধিরা জানান, ৬০ লক্ষ টাকা তৎক্ষণাৎ মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং ৩০ তারিখের মধ্যে বাকি অর্থ দেওয়া হবে। কিন্তু আদালত ফের প্রশ্ন তোলে, “এখন তো অনলাইনেই টাকা পাঠানো যায়, তাহলে দু’দিন সময় লাগছে কেন?” রাজ্যের তরফে ছুটির অজুহাত তোলা হলে বিচারপতি পাল্টা বলেন, “ছুটি থাকলেও ইন্টারনেট পরিষেবা তো বন্ধ নেই!”
অবশেষে রাজ্য সাত দিনের সময় চেয়েছে। আদালত (Calcutta High Court) জানিয়েছে, ২৯ অক্টোবর এবং ৬ নভেম্বর এই বিষয়ে ফের বৈঠক হবে। সেখানে মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। ১০ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত হয়েছে।
এই ঘটনার পর প্রশাসনিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য। আদালতের মন্তব্য, কড়া সুরে রাজ্যকে সতর্কবার্তা— উন্নয়নমূলক কাজে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে আর গাফিলতি চলবে না। বিচারপতির হুঁশিয়ারি স্পষ্ট, প্রয়োজন হলে রাজ্যের অর্থ লেনদেনই বন্ধ করে দেওয়া হবে।










