কসবায় কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল রাজ্যজুড়ে প্রতিক্রিয়া, এবার হস্তক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। ঘটনাটিকে ঘিরে জনস্বার্থে তিনটি মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি সৌমেন সেন। ইতিমধ্যেই বৃহস্পতিবারের মধ্যে মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে, যা এই নৃশংস অপরাধের তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা (Calcutta High Court)।
এই তিনটি জনস্বার্থ মামলার অনুমতি চেয়ে আদালতের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হন আইনজীবী সৌম্যশুভ্র রায়, সায়ন দে ও বিজয় কুমার সিংহল। আদালত তাঁদের আবেদনে সম্মতি জানিয়ে মামলার অনুমতি দেন। মামলাকারীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, কসবাকাণ্ডের (Calcutta High Court) তদন্ত যেন আদালতের সরাসরি নজরদারিতে হয় এবং কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি, কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও আদালতের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।
এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারকে ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনা ঘিরে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
এরই মধ্যে মূল অভিযুক্তের আরও একটি অশ্লীল ভিডিও সামনে এসেছে, যা তদন্তকে আরও গভীর দিকেই নিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি তদন্তকারী সংস্থার। ইতিমধ্যে পুলিশ এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে, তবে তদন্ত এখনও চলছে।
ঘটনার তদন্তে কেন্দ্রীয় স্তর থেকে সক্রিয় হয়েছে বিজেপি। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা চার সদস্যের একটি তথ্যানুসন্ধানী (ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং) দল গঠন করেছেন, যাঁরা ইতিমধ্যেই কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই দল নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করবেন এবং গোটা ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে তুলে ধরবেন। এই টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন প্রাক্তন আইপিএস ও বিজেপি সাংসদ সত্যপাল সিং। দলের অন্য সদস্যরা হলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ বিপ্লব দেব, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মীনাক্ষী লেখী ও রাজ্যসভার সাংসদ মননকুমার মিশ্র।
তবে বিজেপির এই পদক্ষেপকে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “যে রাজ্যগুলোতে বিজেপি শাসনে রয়েছে, সেখানেও তো ভয়াবহ অপরাধ হয়। সেসব রাজ্যে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম পাঠানো হয় না কেন? তখন বিজেপি-নেতৃত্বের মানবিকতা কোথায় থাকে?”
এই চরম মানবিক সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে প্রশাসন, আদালত ও রাজনৈতিক দলগুলির ভূমিকাই এখন নজরে জনসাধারণের।