মুর্শিদাবাদের জাফরাবাদে হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর পুত্র খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার শুনানি থেকে সরে দাঁড়ালেন কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। সোমবার তিনি (Calcutta High Court) জানান, এই মামলায় তিনি আর শুনানি করবেন না এবং মামলাটি অন্য কোনও বেঞ্চে স্থানান্তরের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানাতে বলেন মামলাকারীদের (Calcutta High Court)।
বিচারপতি ঘোষ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এই মামলায় এখন আর কিছুই নেই। অপহরণ কোথায় হয়েছে? প্রধান বিচারপতির কাছে যান, উনি নতুন বেঞ্চে পাঠাবেন।” সঙ্গে তিনি কটাক্ষ করেন রাজনৈতিক প্রভাবশালী আইনজীবীদের দিকেও। বলেন, “বর্তমানে কিছু আইনজীবী তাঁদের রাজনৈতিক মক্কেলদের সঙ্গে নিজেদের জড়িয়ে ফেলছেন। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
এই প্রসঙ্গে প্রবীণ আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও বলাই রায়ের কথা উল্লেখ করে বিচারপতি বলেন, “আমি কখনও বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বা বলাই রায়কে আদালতের ভিতরে রাজনৈতিক আচরণ করতে দেখিনি।”
উল্লেখ্য, ওয়াকফ সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে গত মাসে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের সুতি, ধূলিয়ান, সামসেরগঞ্জ সহ একাধিক এলাকা। জাফরাবাদে একাধিক বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সেখানেই ভয়াবহ ভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর ছেলেকে। এই ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি চরমে ওঠে। নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সোমবার মুর্শিদাবাদ সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীও।
এদিকে, এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই উঠে আসে আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। নিহতদের স্ত্রীদের অপহরণ করা হয়েছে, এমন দাবিতে তোলপাড় শুরু হয়। পরে জানা যায়, তাঁরা স্বেচ্ছায় সল্টলেকের সেফ হাউসে রয়েছেন।
কিন্তু রবিবার রাতে বিধাননগর পূর্ব থানার প্রায় ৪০ জন পুলিশ সদস্য তাঁদের খুঁজতে সেফ হাউসে যান। অভিযোগ, পুলিশ জোর করে দরজা ভেঙে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, তাঁদের অপহরণ করা হয়েছিল। অপরদিকে, নিহতদের পরিবারের বক্তব্য—তাঁরা স্বেচ্ছায় সেফ হাউসে রয়েছেন এবং পুলিশের এই অতি সক্রিয়তার বিরুদ্ধেই হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়।
এই মামলায় হাই কোর্টে তাঁদের হয়ে আইনি লড়াইয়ে ছিলেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী ও তরুণজ্যোতি তিওয়ারি।