২১ জুলাইয়ের তৃণমূলের শহিদ দিবস ঘিরে এবার নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। দীর্ঘদিন ধরে এই মেগা রাজনৈতিক জমায়েত ঘিরে সাধারণ মানুষের হয়রানি ও যানজটের অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে আদালত (Calcutta High Court) এবার সময় বেঁধে দিল মিছিল বের করার। শুক্রবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সমস্ত মিছিল সকাল ৮টার আগে শেষ করতে হবে। সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত যেন শহরের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে কোনওভাবেই যানজট না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে কলকাতা পুলিশকে।
আদালতের (Calcutta High Court) নির্দেশে বলা হয়েছে, বিশেষ করে হাইকোর্ট সংলগ্ন এলাকা এবং মধ্য কলকাতার ৫ কিলোমিটারের মধ্যে যেন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ থাকে। সকাল ১১টার পর ফের মিছিল বের করা যাবে। তবে ততক্ষণ পর্যন্ত শহরের স্বাভাবিক জনজীবন যেন ব্যাহত না হয়, তা নজরদারিতে রাখতে হবে পুলিশ কমিশনারকে।
আদালতে (Calcutta High Court) মামলাকারীদের তরফে জানানো হয়, ২১ জুলাইয়ের দিন ফেরি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়, বিভিন্ন স্কুল সেই দিন ছুটি ঘোষণা করে কারণ ছাত্র-শিক্ষকদের পৌঁছানোই সম্ভব হয় না। এমনই একটি উদাহরণ হিসেবে ডন বস্কো স্কুলের নোটিশও আদালতে পেশ করা হয়।
এর জবাবে তৃণমূলের তরফে আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য দাবি করেন, এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। AILU একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সংগঠন এবং সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব পাওয়ার জন্য এই মামলা করা হয়েছে বলেই তাঁর অভিযোগ। তিনি আরও বলেন, “পুজোর সময় তো অসুবিধা হয় না, অথচ প্রতি বছর ২১ জুলাই আমাদের আদালতে আসতে হয়!”
এই সময় বিচারপতি (Calcutta High Court) প্রশ্ন তোলেন, “তাহলে মুচলেকা দিন যে অসুবিধা হবে না। পুজোর মতো ব্যবস্থা করুন। বাঁশের ব্যারিকেড করে নিয়ন্ত্রণ করুন জনসমাগম। কত লোক হবে, সেটাই বা জানেন?”
তৃণমূল জানায়, গত বছর শহিদ দিবসের সভায় প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ এসেছিলেন। এর উত্তরে বিচারপতি বলেন, “সিটি পুলিশ কমিশনার একজন সরকারি কর্মচারী। যদি ৫ লক্ষ মানুষও আসে, তা-ও যদি ঠিকঠাক মনিটরিং না হয়, তবে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “যে ১০টি রাস্তা বন্ধ হয়, সেগুলি উত্তর কলকাতার প্রাণ। একটি বন্ধ মানে গোটা শহর থমকে যাওয়া। এত বড় জনসমাগম আরও নিবিড়ভাবে নজরদারি ছাড়া সম্ভব নয়।”
তবে এদিন মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। হাইকোর্ট সমস্ত পক্ষকে হলফনামা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গেই এবার প্রথমবারের মতো আদালতের কড়া নজরদারির ছায়া পড়ল তৃণমূলের শহিদ দিবসের মেগা জমায়েতেও।