গায়ে জড়ানো জাতীয় পতাকা, কানে ভেসে আসছে ‘জয় হিন্দ’ ধ্বনি—এভাবেই বীর সেনা (BSF Jawan) পূর্ণম কুমার সাউকে স্বাগত জানাল হাওড়া স্টেশন। শুক্রবার বিকেলে পূর্বা এক্সপ্রেস পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই ১৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে তৈরি হয় এক আবেগঘন মুহূর্ত (BSF Jawan)। রেল পুলিশের নিরাপত্তার বলয় ভেদ করেই হাজারো মানুষের ভালোবাসায় ভেসে যান বাংলার এই বীরপুত্র (BSF Jawan)।
পাকিস্তানে ২১ দিন আটক থাকার পরে, দীর্ঘ অপেক্ষার শেষে অবশেষে নিজের মাটিতে ফিরলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরের বাসিন্দা পূর্ণম। কাঁধে তেরঙা, চোখে জল—এভাবেই হাওড়া স্টেশনে পা রাখেন তিনি। চারপাশে তখন শুধু ‘ভারত মাতার জয়’, ‘জয় হিন্দ’-এর আওয়াজ।
ভুল করে সীমান্ত পার, তারপর ২১ দিনের বন্দিদশা…
ঘটনাটি শুরু হয়েছিল ২৩ এপ্রিল। জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরদিন, পঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরে বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার নিয়মিত ডিউটিতে ছিলেন। সকাল ১১টা ৫০ মিনিট নাগাদ ভুলবশত আন্তর্জাতিক সীমান্ত পার করে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ধরে ফেলে পাকিস্তানি রেঞ্জার্স।
এরপর শুরু হয় উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর পরিবারের প্রার্থনার দিনগোনা। অবশেষে ১৪ মে আট্টারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে তাঁকে ফেরত দেয় পাকিস্তান। তবে সেদিনও বাড়ি ফেরা হয়নি। বিএসএফ জানায়, তাঁর শারীরিক পরীক্ষা, কাউন্সেলিং এবং বন্দিদশার সময় কী ঘটেছে, তা জানার প্রয়োজন রয়েছে।
‘আপনাদের প্রার্থনায়ই দেশে ফিরেছি’— বললেন বীর জওয়ান
হাওড়া স্টেশনে দাঁড়িয়ে পূর্ণম বলেন, “আপনাদের আশীর্বাদ আর প্রার্থনার জন্যই আমি বেঁচে ফিরে এলাম। এদেশ, এই মাটি, এই মানুষ আমার গর্ব।” প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো সাধারণ মানুষের চোখেও ছিল জল, গলায় ছিল কণ্ঠরোধ।
বীরের এই ফিরে আসা শুধু একটি মানুষের নয়, গোটা জাতির কাছে গর্বের। আর আজকের দিনটি থেকে আবারও মনে পড়ে গেল—একটি দেশের বীর জওয়ান শুধু সীমান্তের রক্ষকই নন, তিনিই আমাদের আত্মবিশ্বাস, সাহস আর আত্মত্যাগের প্রতীক।