খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর ভবানীপুরে বিপুল সংখ্যক নাম বাদ পড়া নিয়ে তৎপর হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ভবানীপুরের আট কাউন্সিলর এবং বিএলএ-টুদের নিয়ে নিজের বাসভবনে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত বক্সী। ছিলেন দেবাশিস কুমার, সন্দীপ রঞ্জন বক্সী, অসীম বসু-সহ ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা (Mamata Banerjee)।
সূত্রের খবর, খসড়া তালিকায় যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে কেউ বৈধ ভোটার হলে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর স্পষ্ট নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। যোগ্য ভোটারদের নাম যাতে কোনওভাবেই বাদ না যায়, তা নিশ্চিত করতে সব বিএলএ ও দলীয় কর্মীদের মাঠে নামতে বলেন তিনি। বিশেষ করে মৃত ও স্থানান্তরিত ভোটারদের তালিকা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে যাচাই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে (Mamata Banerjee)। অনেক ক্ষেত্রেই জীবিত ভোটারদের মৃত দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সব ভুল সংশোধনের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে বিশেষ নজর দিতে স্থানীয় কাউন্সিলর (Mamata Banerjee) অসীম বসুকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ওয়ার্ডে বহিরাগতদের বসানো হচ্ছে বলে আগেও অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। খিদিরপুর এলাকার একাধিক ওয়ার্ড, যা ভবানীপুর বিধানসভার অন্তর্গত, সেখানে নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ফিরহাদ হাকিমকে। পাশাপাশি কালীঘাট সংলগ্ন ওয়ার্ডগুলির ভোটার তালিকা দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দেবাশিস কুমারকে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সপ্তাহ পরে যখন শুনানির পর্ব শুরু হবে, তখন প্রতিটি ভোটারের পাশে দাঁড়াতে হবে। আগে যেমন এনুমারেশন ফর্ম ভরার সময় সহযোগিতা করা হয়েছিল, তেমনই পাড়া-পাড়া ক্যাম্প করে সব ধরনের সাহায্য করতে বলা হয়েছে। রাজ্য সরকারের করা ক্যাম্পে যদি কাগজপত্র নিয়ে কোনও ভোটারের সমস্যা হয়, তবে তাঁদের ‘মে আই হেল্প ইউ’ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া যাবে না। তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক বিএলওকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। বৈঠকে বিএলএদের কাজের সমন্বয় নিয়েও খোঁজ নেন তিনি। বিএলএদের একাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। যাঁরা ফর্ম জমা দেননি, তাঁদের সঙ্গেও আবার যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। বহুতল আবাসনে বিশেষ নজর রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বৈঠক থেকে।
উল্লেখ্য, খসড়া তালিকা প্রকাশের পরে রাজ্য জুড়ে প্রায় ৫৮ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ পড়েছে। এর মধ্যে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বাদ পড়েছে ৪৪ হাজার ৭৭০টি নাম। মুখ্যমন্ত্রীর নিজের বুথ, মিত্র ইনস্টিটিউশন বুথে বাদ গিয়েছে ১২৭ জনের নাম। ওই তালিকায় ১৩ জনকে মৃত দেখানো হয়েছে। বাকিদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, কেউ খুঁজে পাওয়া যায়নি বা স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত হয়েছেন বলে উল্লেখ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই দ্রুত বৈঠক ডেকে নাম বাদ পড়া ভোটারদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।












