বাংলাদেশি (Bangladeshi) সন্দেহে বাঙালি নাগরিকদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ নতুন নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহুবার সরব হয়েছেন এই ইস্যুতে। এবার সেই ইস্যুই পৌঁছে গেল কলকাতা হাইকোর্টের দরজায় (Bangladeshi)। বীরভূমের পাইকর এলাকার ছয় জন বাসিন্দাকে দিল্লি পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করেছে বলে অভিযোগ। তাঁদের খোঁজ না পেয়ে উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্যরা আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা দায়ের করেছেন (Bangladeshi)।
দিল্লিতে কর্মসূত্রে যাওয়া এই ছয় জনের পরিবার জানাচ্ছে, গত কিছুদিন ধরে তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তাঁরা কোথায় রয়েছেন, কী অবস্থায় আছেন—তা সম্পূর্ণ অজানা (Bangladeshi)। সেই কারণেই দ্রুত হস্তক্ষেপ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি হেবিয়াস কর্পাস মামলা রুজু করা হয়েছে।
মামলাকারীদের দাবি, অবিলম্বে তাঁদের পরিবার-পরিজনদের খুঁজে বের করে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিক আদালত। তাঁদের আইনজীবী স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এরা সকলে ভারতীয় নাগরিক। শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে বাংলাদেশি (Bangladeshi) বলে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।”
মামলার শুনানির জন্য শুক্রবার দিন ধার্য হয়েছে। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ওড়িশা থেকেও একই ধরনের একটি মামলা জমা পড়েছে। সেই মামলার সঙ্গে বীরভূমের ঘটনারও একসঙ্গে শুনানি হবে।
এই মামলার মূল ভিত্তি একটি হেবিয়াস কর্পাস আবেদন—যেখানে দাবি করা হয়, বেআইনিভাবে কাউকে আটক করলে তাকে অবিলম্বে আদালতের সামনে হাজির করতে হবে এবং আটক করার বৈধতা যাচাই করতে হবে। মূলত, এ ধরনের আইনি প্রক্রিয়া ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই ইস্যুতে একাধিকবার কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি বিধানসভাতেও তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, “বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি বানিয়ে পুশব্যাক করা হচ্ছে। ভোটে জেতা সরকারের নাগরিকদের এভাবে হেনস্থা করা ভয়ংকর।”
তিনি আরও বলেন, “পরিচয়পত্র দেখালেও কাজ হচ্ছে না। ওরা বলছে বাঙালিই মানেই বাংলাদেশি। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে, বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ডাবল ইঞ্জিন সরকারের নামে চলছে এই বিদ্বেষমূলক রাজনীতি।”
বস্তুত, মমতার এই অভিযোগের মধ্যেই হাইকোর্টে মামলা দায়ের নতুন মাত্রা যোগ করল এই বিতর্কে। আগামী শুক্রবার কী রায় দেন বিচারপতিরা, সেদিকে এখন তাকিয়ে গোটা রাজ্য।