কলকাতার বুকেই চাঞ্চল্যকর ঘটনা! এতদিন পরিযায়ী শ্রমিকরা অভিযোগ করছিলেন, ভিন রাজ্যে তাঁদের বাংলাদেশি (Bengali Harassment) বলে হেনস্থা করা হচ্ছে। এবার সেই একই অভিযোগ উঠল খোদ কলকাতায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রকে বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শিয়ালদহ ব্রিজের নিচের কিছু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত ছাত্ররা এখন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় ইতিমধ্যেই মুচিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বা আদৌ কেউ ধরা পড়েছে কি না, তা নিয়ে এখনও কিছু জানায়নি পুলিশ (Bengali Harassment)।
ঘটনা ঘটেছে বুধবার রাতে। জানা গেছে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারমাইকেল হোস্টেলের এক ছাত্র শিয়ালদহ ব্রিজের নিচে মোবাইল সরঞ্জামের দোকানে গিয়েছিলেন কিছু জিনিস কিনতে। সেখানে দামাদামি নিয়ে দোকানদারের সঙ্গে বচসা বাধে। ওই দোকানদার হিন্দিতে গালিগালাজ শুরু করেন এবং বাংলা ভাষায় কথা বলায় ছাত্রটিকে বাংলাদেশি (Bengali Harassment) বলে অপমান করেন। এরপর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। ওই ছাত্র হস্টেলে ফিরে এসে সহপাঠীদের সঙ্গে নিয়ে ফের দোকানে গেলে আশপাশের আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী তাঁদের উপর চড়াও হন। অভিযোগ, ধারালো অস্ত্র ও বন্দুক দেখিয়ে চারজন ছাত্রকে মারধর করা হয় (Bengali Harassment)।
আক্রান্ত ছাত্ররা জানান, তাঁদের উপর হামলা চালিয়ে এক ছাত্রের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয় এবং একজনকে আটকেও রাখা হয়েছিল। পরে আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ছাত্ররা মুচিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং থানার সামনে বসেই বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।
ঘটনার খবর পেয়ে মুচিপাড়া থানায় পৌঁছন বাংলা পক্ষের নেতা গর্গ চট্টোপাধ্যায়। তিনি পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ান এবং পুলিশের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। আক্রান্ত ছাত্র বলেন, “আমাকে বাংলাদেশি বলে গাল দিল। তারপর মারধর করল। মোবাইল কেড়ে নিল। হুমকিও দিল।” আরেক ছাত্র বলেন, “আমরা শুধু মোবাইলের কভার কিনতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশি বলে অপমান করা হল। প্রতিবাদ করতেই ছুরি-বন্দুক নিয়ে হামলা চালানো হয়।”
বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, “শিয়ালদহ মানে কলকাতার গেটওয়ে। সেখানে যদি বাংলাদেশি বলে মারধর হয়, তাহলে ব্যাপারটা গভীরভাবে তদন্ত করা জরুরি।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “আগে ভিন রাজ্যে এরকম হত। এখন কলকাতায় হচ্ছে। এ পরিবেশ তৈরি করছে দিল্লিওয়ালারা।” গর্গ চট্টোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা গুজরাটে মার খাব, রাজস্থানে মার খাব, আর এখন কি কলকাতাতেও মার খাব? বিজেপি সরকার নেই এখানে। তাহলে এই দুষ্কৃতীরা গ্রেফতার হবে না কেন?”
খোদ কলকাতার বুকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বাংলাদেশি বলে মারধরের অভিযোগ! প্রশ্ন উঠছে—রাজধানীর নিরাপত্তা কি তবে ভিন রাজ্যের মতোই অনিশ্চিত হয়ে উঠছে?