একদিকে বিএসএফ, অন্যদিকে রাজ্য পুলিশ। আর এই দুই পক্ষের মধ্যে যে কাজ কার বেশি চলে, তা নিয়েই এখন রাজনৈতিক উত্তাপ তুঙ্গে। সূত্রের খবর, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলা ভাষায় কথা বললেই মানুষকে বাংলাদেশি (Bangladeshi) সন্দেহে পুশব্যাক করা হচ্ছে, এমনই অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।
সোমবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এই বিষয়ে সরাসরি অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বাংলা ভাষায় কথা বললেই, পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও বাঙালিদের বাংলাদেশে (Bangladeshi) পাঠানো হচ্ছে। অসম, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক— সব ডাবল ইঞ্জিন সরকারগুলিতে চলছে এই হেনস্থা। এটা বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের প্রতি চরম অপমান।”

এই ঘটনার এক চাঞ্চল্যকর দৃষ্টান্ত উঠে এসেছে মহারাষ্ট্র থেকে। মুর্শিদাবাদের দুই যুবক ও বর্ধমানের এক যুবক পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে গিয়েছিলেন মুম্বইয়ে। কিন্তু সেখানকার পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে এবং বাংলাদেশি (Bangladeshi) সন্দেহে তুলে দেয় বিএসএফ-এর হাতে। এরপর তাঁদের কোচবিহারে এনে বাংলাদেশে পুশব্যাক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
কিন্তু কোচবিহার পুলিশের তৎপরতায় পুরো ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। তিনজনের পরিবারের থেকে সঠিক পরিচয়পত্র ও ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ জোগাড় করে পুলিশ বিএসএফ-এর কাছে আবেদন করে। শেষ পর্যন্ত, পুলিশের চাপ ও প্রমাণের জেরে সীমান্তে ফ্ল্যাগ মিটিং হয়, আর সেখান থেকেই তিনজন ভারতীয় নাগরিককে (Bangladeshi) ফেরত আনা হয়।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এ ঘটনা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি এক প্রকার হুঁশিয়ারি হিসেবেই ধরা হচ্ছে। এই বিষয়ে বিধানসভায় সরাসরি বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, “আমরা ভারতীয়, বাংলা আমাদের ভাষা। শুধু বাংলা বললেই কাউকে বাংলাদেশি বলা যাবে না।”
এই পুশব্যাক রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও। তাঁর বক্তব্য, “যেখানে-সেখানে শুধু বাংলা বললেই বলা হচ্ছে বাংলাদেশি। এটা কি ভারতবর্ষে বাংলা ভাষার প্রতি অবজ্ঞা নয়? সমস্ত কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও বাঙালিদের হেনস্থা করা হচ্ছে।”