Shopping cart

TnewsTnews
  • Home
  • Important
  • ১৮ বছর কারাগারে! নিজের বাবার বিরুদ্ধেও আন্দোলনে নেমেছিলেন — প্রয়াত বাংলার আগুনপাথর বিপ্লবী আজিজুল হক
রাজ্য

১৮ বছর কারাগারে! নিজের বাবার বিরুদ্ধেও আন্দোলনে নেমেছিলেন — প্রয়াত বাংলার আগুনপাথর বিপ্লবী আজিজুল হক

azijul haque
Email :3

প্রয়াত হলেন বাংলার বিশিষ্ট বামপন্থী চিন্তাবিদ ও নকশাল আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা আজিজুল হক (Azizul Haque)। সোমবার দুপুর ২টা ২৮ মিনিটে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (Azizul Haque)। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন এই প্রবীণ বাম নেতৃস্থানীয় চিন্তাবিদ। রবিবার থেকেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়, কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আজিজুল হকের (Azizul Haque) জীবন যেন ছিল এক বিপ্লবের ধারাবাহিক অধ্যায়। ১৯৪২ সালের ২৮ আগস্ট হাওড়ার উলুবেড়িয়ার রণমহল গ্রামে জমিদার পরিবারে জন্ম তাঁর। তাঁর পূর্বপুরুষেরা ছিলেন মুঘল দরবারের ইউনানি চিকিৎসক। তবে জমিদার সন্তান হয়েও তিনি (Azizul Haque) লড়েছিলেন কৃষকদের পক্ষে, এমনকি নিজের বাবার বিরুদ্ধেও আন্দোলনে নামেন এবং জমি বিলিয়ে দেন ভূমিহীনদের মধ্যে। ছাত্রজীবনেই কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন, নন্দগোপাল ভট্টাচার্য ও বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়ের প্রভাবে প্রবেশ করেন বাম রাজনীতির গভীরে।

মাত্র ১৭ বছর বয়সে অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন (Azizul Haque)। কলকাতায় পড়াশোনা করতে এসে আন্দোলনের ময়দানে নিয়মিত মুখ হয়ে ওঠেন। ১৯৬৫ সালে প্রথমবার গ্রেফতার হন। নকশাল আন্দোলনের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত থেকে জেল, পুলিশি হেনস্থা ও নির্যাতন সত্ত্বেও কখনও পিছু হটেননি। ১৯৭৬ সালে জেল ভেঙে পালানোর ঐতিহাসিক ঘটনায় নেতৃত্ব দেন তিনি। শহিদ হন কালু হালদার ও স্বদেশ ঘোষ।

এরপর গঠন করেন মজুমদারপন্থী সিপিআই (এম-এল) এর দ্বিতীয় কেন্দ্রীয় কমিটি। গেরিলা আন্দোলন চালান পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে (Azizul Haque)। ১৯৮২ সালে ফের গ্রেফতার হন এবং বামফ্রন্ট আমলে দীর্ঘদিন জেলে কাটান। সেখানেও চলতে থাকে অকথ্য নির্যাতন। তাঁর মুক্তির দাবিতে দেশের বহু বিশিষ্টজন সরব হন। ১৮ বছর কারাবাস শেষে ১৯৮৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর মুক্তি পান।

মুক্তির পর নিজেকে সম্পূর্ণভাবে যুক্ত করেন গণআন্দোলন ও লেখালেখির সঙ্গে। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘কারাগারে ১৮ বছর’ বামপন্থী রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে ওঠে। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় তৃণমূল-বিরোধী অবস্থান নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়লেও নিজের বিশ্বাসে অটল থাকেন আজিজুল। তিনি বিশ্বাস করতেন বিপ্লবের পথ কখনও সুবিধাবাদী হতে পারে না।

জীবনের শেষ পর্যায়ে পারকিনসনস রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন, থেমে যায় লেখালেখিও। তবুও ২০২৪ সালে “পরিচয়” পত্রিকার শারদ সংখ্যায় তাঁর একটি আত্মজীবনীমূলক সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়, যা ছিল তাঁর শেষ লেখার স্বাক্ষর। আজ তাঁর প্রয়াণে রাজ্যজুড়ে শোকের ছায়া, একটি আদর্শ লড়াকু জীবনের ইতি ঘটল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts