নয়া দিল্লি থেকে কলকাতা—বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে লাগাতার হেনস্থার ঘটনায় এবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হলেন প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি ও বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Choudhury)। রবিবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে পাঠানো এক খোলা চিঠিতে অধীরবাবু স্পষ্ট ভাষায় জানান, দেশের একাধিক রাজ্যে কাজের খোঁজে যাওয়া বাংলার শ্রমিকরা শুধু যে অবজ্ঞা ও অবহেলার শিকার হচ্ছেন, তাই নয়—তাদের ভাষা ও চালচলনের কারণে তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলেও দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে (Adhir Ranjan Choudhury)।
চিঠিতে তিনি (Adhir Ranjan Choudhury) লেখেন, “এই শ্রমিকরা প্রত্যেকেই ভারতের নাগরিক। পেটের দায়ে ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দেন। অথচ সেখানে তাদের প্রতি ব্যবহার অমানবিক। ভাষা ও পোশাকের কারণে তাদের বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এর ফলে তারা পুলিশের হাতে নিগৃহীত হচ্ছেন। এমনকি, কোনও কোনও ক্ষেত্রে বিএসএফের মারফত সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”
অধীরবাবুর (Adhir Ranjan Choudhury) বক্তব্য অনুযায়ী, এই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকেরা নিজেদের ঘামঝরা রোজগারের টাকায় শুধু নিজেদের সংসারই চালান না, বরং তা রাজ্যের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অথচ, আজ তাঁদের পরিচয় নিয়েই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। এই ভয়ঙ্কর প্রবণতা বন্ধে রাষ্ট্রপতির তৎপর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত মাসেই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের বেআইনিভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে, এমনকি তাঁদের ‘পুশব্যাক’ করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দিল্লির বসন্ত কুঞ্জ এলাকার জয় হিন্দ কলোনিতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক ঘটনায় এমনই অভিযোগ সামনে আসে। যথাযথ নথিপত্র দেখাতে না পারার অজুহাতে দিল্লি পুলিশ তুলে নিয়ে যায় বীরভূমের এক পরিবারের ছয়জনকে। তাদের আত্মীয়স্বজনদের অভিযোগ, কেবলমাত্র বাংলায় কথা বলায় সন্দেহভাজন করে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে এবং পরে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় প্রবল ক্ষোভে ফুঁসছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের তরফে সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে ‘বাঙালিদের প্রতি বিদ্বেষ’ ছড়ানোর অভিযোগ তোলা হয়েছে। এমনকি, ২১ জুলাই শহীদ দিবসের মঞ্চের আগেই রাজপথে বিক্ষোভ মিছিলেরও ঘোষণা করেছে ঘাসফুল শিবির।