মেসির সফরে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে তৈরি হওয়া বিশৃঙ্খলা নিয়ে এবার মুখ খুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে। তার পরেও কেন এই ঘটনা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
যুবভারতী প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ঘটনার পর রাজ্য সরকার দ্রুত এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন, পুলিশ আধিকারিক থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন রাজ্য সরকারকে বারবার কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
অভিষেকের (Abhishek Banerjee) বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর এই ক্ষমা চাওয়ার মধ্যেই তাঁর দায়বদ্ধতা এবং নেতৃত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। একটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার পর রাজ্য সরকার যে ভাবে দ্রুত পদক্ষেপ করেছে, তা ইতিবাচক বলেই মনে করছেন তিনি। তাঁর দাবি, ভুল হলে তা স্বীকার করে নেওয়া এবং ব্যবস্থা নেওয়ার মানসিকতা খুব কম রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যেই দেখা যায়।
বিজেপিকে আক্রমণ করে অভিষেক (Abhishek Banerjee) বলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে কুম্ভমেলার মতো বড় জমায়েতে পদপিষ্ট হয়ে বহু মানুষ মারা গেলেও প্রধানমন্ত্রী বা সংশ্লিষ্ট মুখ্যমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এমন প্রশ্ন তোলা হয় না। সেখানে তদন্ত তো দূরের কথা, ন্যূনতম ক্ষমা চাওয়ার কথাও ওঠে না। অথচ বাংলার ক্ষেত্রে ঘটনার পর এত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও প্রশ্নের শেষ নেই বলে অভিযোগ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর ‘গোট ট্যুরে’ কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এসেছিলেন লিওনেল মেসি। সঙ্গে ছিলেন লুইস সুয়ারেজ ও রড্রিগো ডি পল। অভিযোগ, বিপুল অর্থ দিয়ে টিকিট কেটেও বহু দর্শক মেসিকে দেখতে পাননি। মাঠ ছাড়ার সময় গ্যালারি থেকে বোতল ছোড়া হয়, ব্যানার ভাঙচুর হয় এবং ব্যারিকেড ভেঙে মাঠে ঢুকে তাণ্ডব চালায় উত্তেজিত জনতা। সেই সময় মেসির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
ঘটনার পর ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস পদত্যাগ করেন। মুখ্যমন্ত্রী মেসি ও দর্শকদের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়ের নেতৃত্বে সেই কমিটি দ্রুত কাজ শুরু করে। প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে একাধিক শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করে রাজ্য সরকার। তদন্ত কমিটির সুপারিশে সিট গঠন করা হয়েছে। শোকজ করা হয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে। একই সঙ্গে শোকজ করা হয়েছে বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ কুমার এবং যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব রাজেশ কুমার সিনহাকে। সাসপেন্ড করা হয়েছে বিধাননগরের ডিসি অনীশ সরকারকে এবং বরখাস্ত করা হয়েছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সিইও দেবকুমার নন্দনকে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, এতগুলি কড়া পদক্ষেপের পর রাজ্যের সদিচ্ছা নিয়ে আর প্রশ্ন তোলার জায়গা নেই।













