আমেরিকার বস্টনের নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে চাঞ্চল্যকর বিতর্ক (ChatGPT)! কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার নিয়ে ছাত্রদের প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করে খোদ এক অধ্যাপক নিজেই নাকি ChatGPT ও অন্যান্য AI টুল ব্যবহার করে লেকচার দিয়েছেন — এই অভিযোগে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী এল্লা স্ট্যাপলটন (ChatGPT)।
নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যবসা বিভাগের এই ছাত্রী জানান, ক্লাসে দেখানো স্লাইডে বারবার বানান ভুল, অদ্ভুত চিত্র — যেমন বাড়তি হাত-পা — এমনকি এক জায়গায় স্পষ্টভাবে “ChatGPT” লেখা থাকায় সন্দেহ জাগে তাঁর মনে। তিনি বলেন, “আমাদের AI ব্যবহার করতে বারণ করছেন, অথচ নিজেই সেটা ব্যবহার করছেন — এটা দ্বিচারিতা ছাড়া আর কিছু নয়।”
এই অভিযোগের জেরে এল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা অনুষদে একটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেন এবং এক টার্মের কোর্স ফি — প্রায় ৮,০০০ মার্কিন ডলার — ফেরত চেয়ে আবেদন জানান। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরে তাঁর ফেরতের আবেদন খারিজ করে দেয়।
অধ্যাপকের স্বীকারোক্তি
অভিযোগের জবাবে অভিযুক্ত অধ্যাপক রিক অ্যারোউড স্বীকার করেন, তিনি ChatGPT, Perplexity AI ও Gamma নামের একটি প্রেজেন্টেশন জেনারেটর ব্যবহার করে ক্লাসের জন্য লেকচার প্রস্তুত করেছিলেন। তাঁর মন্তব্য, “পেছনে তাকিয়ে দেখলে মনে হয়, আরও খুঁটিয়ে দেখা উচিত ছিল। শিক্ষক হিসেবে আমাদের উচিত, AI ব্যবহারে স্বচ্ছতা বজায় রাখা।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কমিউনিকেশন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট রেনাটা নিউল এক বিবৃতিতে বলেন, “নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাদান, গবেষণা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে AI ব্যবহারে সহায়ক নীতি মেনে চলে। বিশ্ববিদ্যালয় এর জন্য নানা রকম প্রশিক্ষণ ও সংস্থানও প্রদান করে।”
তবে এই ঘটনাটি কেবলমাত্র একটি প্রতিষ্ঠানের নয়, বরং বিশ্বজুড়ে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মধ্যে AI ঘিরে তৈরি হওয়া এক নতুন আস্থার সংকটের দিকেই ইঙ্গিত করে। ২০২২ সালের শেষ দিকে ChatGPT চালু হওয়ার পর থেকেই ছাত্রদের মধ্যে AI ব্যবহারের প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, যার জেরে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ই AI নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত করেছে — কিন্তু শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও কি একই মানদণ্ড?