‘কাঁটা লাগা’ গানের মাধ্যমে যিনি এক ঝলকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন উষ্ণতা, আবেদন আর আত্মবিশ্বাস—তিনি শেফালি জরিওয়ালা (Shefali Jariwala)। ২০০২ সালে সেই এক গানের ভিডিওতেই নজর কেড়েছিলেন গোটা দেশের দর্শকদের। তাঁর চোখের ভাষা, নাচের ছন্দ, শরীরী ভাষা এতটাই তীব্র ছিল যে, রাতারাতি নাম হয়েছিল ‘কাঁটা লাগা গার্ল’। কিন্তু প্রশ্ন একটাই—এরপর বলিউডে আর তাঁকে তেমন দেখা গেল না কেন?
শেফালি (Shefali Jariwala) এক সাক্ষাৎকারে নিজেই জানিয়েছিলেন সেই যন্ত্রণার কথা, যা দীর্ঘদিন তাঁকে পর্দার আড়ালে রাখত। মাত্র ১৫ বছর বয়স থেকে মৃগী রোগে ভুগছিলেন তিনি (Shefali Jariwala)। হঠাৎ করে খিঁচুনি উঠত, কখনও ক্লাসরুমে, কখনও ব্যাকস্টেজে। এই অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি বারবার ভেঙে দিত তাঁর আত্মবিশ্বাস। শেফালি (Shefali Jariwala) বলেছিলেন, “পরীক্ষায় ভালো করতে হবে, সেই চাপে মনের মধ্যে অজানা ভয় কাজ করত। খিঁচুনি থেকে হত ডিপ্রেশন, আবার ডিপ্রেশন থেকেই ফিরে আসত খিঁচুনি—দু’টো যেন একে অপরকে টেনে নামাত।”
‘কাঁটা লাগা’র পর যখন তাঁর (Shefali Jariwala) ক্যারিয়ার গ্রাফ উপরের দিকে উঠছে, তখনই এই রোগের ছায়া ফেলেছিল তাঁর উপর। অনেক অফার পেলেও সব নিতে পারেননি, কারণ হঠাৎ পারফরম্যান্সের মাঝেই যদি খিঁচুনি শুরু হয়? দাঁত দিয়ে জিভ কেটে ফেলতে পারেন, মঞ্চেই জ্ঞান হারাতে পারেন—এই ভয় তাঁকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াত (Shefali Jariwala)। তাই নিজেই নিজেকে কাজ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা, মানসিক দৃঢ়তা ও পরিবারের সহায়তায় অবশ্য পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছিলেন তিনি। কিন্তু বলিউডে কখনও সেই নিয়মিত জায়গা আর তৈরি হয়নি।
২৭ জুন, মাত্র ৪২ বছর বয়সে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আচমকাই চিরবিদায় নেন এই গ্ল্যামার কুইন। মৃত্যুর মাত্র দু’দিন আগেই একটি ফটোশ্যুটে অংশ নিয়েছিলেন শেফালি। সেই ছবিতে হাসিমুখ, আত্মবিশ্বাসী দৃষ্টি—একেবারেই বোঝা যায়নি, জীবন তাঁকে কী ভয়ঙ্কর সমাপ্তির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
এই আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ অনুরাগীরা। তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না, ফ্ল্যাশলাইটে ভেসে যাওয়া সেই প্রাণবন্ত মুখ এত তাড়াতাড়ি নিভে যেতে পারে কীভাবে!