কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে তৈরি হল এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। বাংলার সুরসম্রাজ্ঞী আরতি মুখোপাধ্যায়কে (Arati Mukherjee) যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজ হাতে বঙ্গ বিভূষণ সম্মান তুলে দিলেন, তখন থেমে গেল সময়। মঞ্চে দাঁড়িয়েই অশ্রুসজল চোখে কেঁদে ফেললেন আরতি। গানের রাণীর কণ্ঠে (Arati Mukherjee) মমতার প্রশংসার ঝরনা বইল— “আমি কিন্তু খুব ভালবেসে নিয়েছি, মমতা, তোমার কাজ আমি পছন্দ করি। তুমি যেভাবে শিল্পীদের পাশে থাকো, তা আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রী করেননি।”
১৯৫০-এর দশক থেকে শুরু হওয়া আরতি মুখোপাধ্যায়ের (Arati Mukherjee) সুরের যাত্রা একসময় হয়ে উঠেছিল বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের প্রতীক। “হার মানা হার”, “বন্যার মতো এসেছো প্রিয়”, “তুমি রবে নীরবে”, “আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা”— তাঁর কণ্ঠে জন্ম নিয়েছে একের পর এক অমর সৃষ্টি। শিশুস্বর থেকে সিনেমার রোমান্টিক গান— প্রতিটি ধারায় ছুঁয়ে গেছেন সুরের শিখর।
চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁকে (Arati Mukherjee) বিশেষ অতিথি হিসেবে পেয়ে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আরতিদি আমাদের অনেক কিছু দিয়েছেন, কিন্তু আমরা তাঁকে কোনওদিন কিছু দিতে পারিনি। আজ আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। বাংলার মাটির ভালোবাসা, এই বঙ্গ বিভূষণ তাঁর হাতে তুলে দিতে পেরে আমরা গর্বিত।”
এই বক্তব্যের পরই মঞ্চে উঠে মুখ্যমন্ত্রীকে থামিয়ে আরতি মুখোপাধ্যায় আবেগভরে বলেন, “আমি কাঁদছিলাম, কারণ এমন সম্মান আমি কখনও পাইনি। মমতা, তুমি শুধু শিল্পী নও, তুমি এক সহৃদয় মানুষ। তোমার ভালোবাসাই তোমাকে অমর করে রাখবে।” মুহূর্তেই হাততালিতে ভরে ওঠে নন্দন চত্বর।
চলচ্চিত্র ও সঙ্গীত জগতে আরতি মুখোপাধ্যায়ের অবদান অনন্য। তাঁর কণ্ঠে বড় হয়ে উঠেছে একাধিক প্রজন্ম। আজও যেখানেই বাজে তাঁর গান, সেখানেই জেগে ওঠে বাংলার আবেগ। তাই এই সম্মান যেন শুধু এক গায়িকার জন্য নয়— এক যুগের, এক সময়ের, এক অনুভবের প্রতি শ্রদ্ধা।










