সঞ্জয় দত্তের জীবন যেন এক রোলার কোস্টার। কখনো সাফল্য, কখনো চরম বিপর্যয়। কিংবদন্তি অভিনেতা সুনীল দত্ত ও নার্গিসের পুত্র হিসেবে জন্ম, শৈশবে মায়ের ক্যানসার, নিজে মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই, একের পর এক ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি — সব মিলিয়ে সঞ্জয়ের জীবন চিত্রনাট্যের মতোই নাটকীয় (Madhuri and Sanjay)।
১৯৮০-র দশকের শেষ দিকে যখন অবশেষে তার অভিনয়জীবনে গতি আসছে, ঠিক তখনই স্ত্রী ঋচা শর্মার ক্যানসার ধরা পড়ে। কিছুদিন পর তিনি সুস্থ হলেও, সেই সময়ে তাদের দাম্পত্য জীবন ভাঙনের মুখে পড়ে। আর ঠিক সেই সময়েই জীবনে প্রবেশ করেন বলিউডের আর এক তারকা — মাধুরী দীক্ষিত (Madhuri and Sanjay)।
১৯৯০ সালে মুক্তি পায় থানেদার, যেখানে সঞ্জয়ের বিপরীতে ছিলেন মাধুরী (Madhuri and Sanjay)। ‘তাম্মা তাম্মা’ গানটি সেই সময়ে সুপারহিট হয়, আর তারসঙ্গে দর্শক খুঁজে পান এক নতুন রসায়ন — সঞ্জয় ও মাধুরীর (Madhuri and Sanjay) অনস্ক্রিন কেমিস্ট্রি। এরপর একাধিক ছবিতে একসঙ্গে কাজ করতে থাকেন তারা, যেমন খতরো কে খিলাড়ি, কানুন আপনা আপনা, সাহিবান, মহান্তা, এবং সবার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাজন।
সাজন ছিল ব্লকবাস্টার। আর তার থেকেও বড় কথা, গুঞ্জনের ঝড় ওঠে—সঞ্জয় ও মাধুরী কি (Madhuri and Sanjay) বাস্তবেও প্রেমে পড়েছেন?
তৎকালীন মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, সাহিবান-এর মাইসোর শ্যুটিংয়ের সময় থেকেই ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তাদের (Madhuri and Sanjay)। পরিচালক রমেশ তালওয়ারের কথায়, “সঞ্জয় প্রিন্স চার্মিং-এর মতো মাধুরীর আশেপাশেই ঘোরাফেরা করতেন, ‘আই লাভ ইউ’ বলে ফিসফিস করতেন, কেউ আছে না আছে, তাতে তার কিছু যায় আসে না!”
১৯৯২ সালে খলনায়ক ছবির শ্যুটিংয়ের সময় পুরো ফিল্ম পত্রিকাগুলো তাদের “বলিউড কাপল” বলে ঘোষণাই করে দেয়। মাধুরী এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “সঞ্জু দারুণ একজন মানুষ। তার হৃদয় খুব ভালো, আর মানুষের ধারণার উল্টো, সে খুব মজার। ও-ই একমাত্র ছেলে যে আমাকে সবসময় হাসাতে পারে। সে খুব সোজাসাপটা, কোনো খেলায় বিশ্বাসী নয়।”
এমনকী ২০২৩ সালে খলনায়ক-এর ৩০ বছর পূর্তিতে এক বিশেষ স্ক্রিনিংয়ে পরিচালক সুভাষ ঘাই মঞ্চে মজার ছলে বলেন, “ও (সঞ্জয়) সবসময় বলত ছবি অনেক দূর যাবে… কিন্তু তাকিয়ে থাকত মাধুরীর দিকে।” সঞ্জয় এই মন্তব্যে শুধু হেসে চুপ করে যান।
এই সম্পর্কের গুজব এতটাই ছড়িয়ে পড়ে যে একটি জনপ্রিয় ফিল্ম ম্যাগাজিন “মাধুরী টু মেরি?” শিরোনামে কভার স্টোরি করে। সেখানে বলা হয়, ১৯৯৪ সালের মধ্যে মাধুরী বিয়ে করতে পারেন এবং সিনেমা ছেড়ে দেবেন — যদিও পাত্রের নাম সেখানে ছিল না।
তবে মিডিয়ার জল্পনা-আলোচনা যতই চলুক না কেন, বাস্তবে সেই সম্পর্ক টিকে থাকেনি। মাধুরী কখনও বিয়ে করেননি সঞ্জয়কে। কিন্তু তাদের সেই প্রেম পর্ব আজও বলিউড ইতিহাসের এক রহস্যময় অধ্যায়।