ভিয়েতনামের (Vietnam) হা লং বে-তে ভয়ঙ্কর নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩৪ জনের। শনিবার দুপুরে হঠাৎ এক প্রবল ঝড়ের কবলে পড়ে উল্টে যায় পর্যটক বোঝাই একটি নৌকা। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন একাধিক শিশু-সহ বেশ কয়েকজন যাত্রী। প্রাণঘাতী এই দুর্ঘটনার পর শোকস্তব্ধ পুরো ভিয়েতনাম (Vietnam)।
হা লং বে, যা ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে পরিচিত এবং প্রতি বছর লাখো পর্যটককে আকর্ষণ করে, সেখানেই ঘটল এই মর্মান্তিক ঘটনা ন। VNExpress জানিয়েছে, নৌকাটিতে মোট ৪৮ জন পর্যটক ও ৫ জন কর্মী ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে অধিকাংশই হ্যানয় থেকে আসা পরিবার এবং তাঁদের সঙ্গী ছোট ছোট শিশু।
জানা গেছে, হঠাৎ আকাশ কালো হয়ে আসে দুপুর ২টার দিকে (Vietnam)। এরপর শুরু হয় টানা শিলাবৃষ্টি, বজ্রবিদ্যুৎ ও দমকা হাওয়া। প্রবল ঝড়ে নৌকাটি উল্টে যায়। স্থানীয় এক কর্মী ট্রান ট্রং হুং জানান, “শিলাবৃষ্টি এত বড় ছিল যেন কারও পায়ের বুড়ো আঙুল! গর্জন-চমকাতে আকাশ-বাতাস কেঁপে উঠেছিল।”
সীমান্ত রক্ষীরা (Vietnam) এখন পর্যন্ত ১১ জনকে জীবিত উদ্ধার করতে পেরেছেন। জলে ভেসে থাকা ৩৪টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও অন্তত আটজন নিখোঁজ, যাঁদের সন্ধানে চলছে তৎপর উদ্ধার অভিযান।
এই দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় মাত্র ১০ বছর বয়সি এক বালক। ভিয়েতনামনেট-কে সে জানায়, “আমি একটা বড় শ্বাস নিয়ে পানির তলায় ডুব দিই, একটা ফাঁক দিয়ে সাঁতার কেটে বেরিয়ে আসি, তারপর চিৎকার করি। তখন এক সেনার নৌকা এসে আমাকে টেনে তোলে।”
ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফ্যাম মিন চিন এই ভয়াবহ ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত উদ্ধার অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে, দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
গত কয়েকদিন ধরেই ভিয়েতনামের উত্তরে চলছিল তীব্র গরম, তাপমাত্রা ছুঁয়েছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই আবহেই আচমকা নেমে আসে ঝড়। দেশের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, এই ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে দক্ষিণ চীন সাগরে তৈরি হওয়া টাইফুন উইফার কোনও সম্পর্ক নেই—এটি সম্পূর্ণ স্থানীয় ঝড়।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালেও টাইফুন ইয়াগির সময় হা লং উপকূলে ৩০টিরও বেশি জলযান ডুবে যায়, তখন থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এবারের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা সেই আশঙ্কাকেই যেন আরও একবার সত্যি করল।