২০২৫ সালের জন্য জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল প্রকাশ করল আমেরিকা (Donald Trump)। আর সেই নথিতেই নীরবে হলেও স্পষ্টভাবে গুরুত্ব হারাল ভারত। আগের প্রশাসন যেখানে ভারতকে চিনের মোকাবিলায় এক শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সহযোগী হিসেবে তুলে ধরেছিল, সেখানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফার সরকারের নীতিপত্রে ভারতের জায়গা অনেকটাই বদলে গিয়েছে (Donald Trump)। এবার ভারতকে আর বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়নি, বরং কতটা কাজে লাগবে সেই নিরিখেই বিচার করা হয়েছে।
বাইডেন জমানার সঙ্গে এই দৃষ্টিভঙ্গির ফারাক চোখে পড়ার মতো। তখন ভারতের উত্থানকে আমেরিকার স্বার্থের পক্ষে ইতিবাচক বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। দীর্ঘমেয়াদি কৌশল, প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং প্রতিষ্ঠানগত সহযোগিতার কথাও উঠে এসেছিল। কিন্তু নতুন নথিতে স্পষ্ট, ওয়াশিংটন এখন শক্তির ভারসাম্য বদল নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার চোখে ভারত এখন খুব বেশি স্বাধীন এবং বহু দেশের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে চলার নীতিতে বিশ্বাসী (Donald Trump)। তাই তাকে আর সহজে আমেরিকা-নেতৃত্বাধীন শিবিরে ফেলা যাচ্ছে না।
এই কৌশলপত্রে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গিই প্রাধান্য পেয়েছে। বিশ্বজুড়ে অতিরিক্ত হস্তক্ষেপের নীতি থেকে সরে এসে আমেরিকা এখন নিজের অঞ্চল, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ এবং দেশে শিল্প ফেরানোর উপর বেশি জোর দিচ্ছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ হলেও আর আবেগের কেন্দ্রবিন্দু নয় (Donald Trump)। সহযোগী দেশগুলোর কাছ থেকে এখন বেশি দায়ভার নেওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। বন্ধুত্বের বদলে লেনদেনের সম্পর্কই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
এর প্রভাব ভারতের উপরও পড়তে পারে। বাণিজ্যনীতি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনা এবং কৌশলগত অবস্থান—এই সব ক্ষেত্রেই ভারত বরাবর নিজের স্বাধীনতা বজায় রাখতে চেয়েছে। কিন্তু নতুন নীতিতে বাণিজ্য ঘাটতি ও শুল্ক নিয়ে কড়া মনোভাবের ইঙ্গিত রয়েছে, যা ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে নতুন বিরোধ তৈরি করতে পারে। পাশাপাশি অভিবাসন নীতিতে মেধাভিত্তিক ভিসাকে সুবিধা নয়, বরং ফাঁকফোকর হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি ও বিজ্ঞান ক্ষেত্রের কর্মীদের জন্য সুযোগ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত উত্তেজনা নিয়েও নথিতে কার্যত নীরবতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, সরাসরি আমেরিকার স্বার্থে আঘাত না লাগলে এই ধরনের সংঘাতে জড়াতে চাইছে না ওয়াশিংটন। ভারতের গুরুত্ব তাই মূলত কোয়াড জোটে ভূমিকা রাখা এবং আমেরিকার প্রযুক্তিগত মানদণ্ডে সঙ্গ দেওয়া পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকছে।
এই অবস্থানকে ভারত-বিরোধিতা বলা না হলেও, আবেগহীন বাস্তববাদ স্পষ্ট। ভারতের সামনে চ্যালেঞ্জ এখন একটাই—নির্ভরশীল না হয়ে কীভাবে নিজেকে প্রাসঙ্গিক রাখা যায়। যেখানে প্রশংসার জায়গা নিয়েছে চাপ, আর সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে বারবার নতুন করে দরকষাকষি করতে হচ্ছে।










