বালোচিস্তানের জাফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাকের (Train hijack) ঘটনায় রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছিল, তারা সফলভাবে এই অভিযান শেষ করেছে এবং সব যাত্রীকে মুক্ত করা হয়েছে (Train hijack)। তবে এবার স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহী গোষ্ঠী বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (BLA) বিস্ফোরক দাবি করে জানাল, পাকিস্তানি সেনার সেই বক্তব্য মিথ্যা (Train hijack)।
বিদ্রোহী সংগঠনটি দাবি করেছে, হাইজ্যাকের ঘটনায় বন্দি থাকা ২১৪ জন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে বিএলএ। এর আগে, কোয়েটা স্টেশন থেকে কয়েকশো কফিন নিয়ে যাওয়ার ভিডিও প্রকাশ্যে আসায় এই দাবি আরও জোরাল হয়েছে।
এক বিবৃতিতে বিএলএ মুখপাত্র জানিয়েছেন,”পাকিস্তানি সেনার পরাজয় ঘটেছে এবং এর জন্য দায়ী পাকিস্তান সরকারই। আমরা শান্তিপূর্ণ আলোচনার পথ খুলে রাখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পাকিস্তান সরকার বিদ্রোহীদের সঙ্গে কোনও আলোচনায় বসতে চায়নি। তারা কেবল দমননীতিতেই বিশ্বাসী।”
গত ১১ মার্চ, বোলান গিরিপথের কাছে কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছিনতাই করে বিদ্রোহীরা। ট্রেনটিতে প্রায় ৪৫০ জন যাত্রী ছিলেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী উদ্ধার অভিযানে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ বাধে। বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৪ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। বিএলএর দাবি, সংঘর্ষে তাদের ৩৩ জন যোদ্ধাও মারা যান। ১২ মার্চ রাতে ৩ জন বিদ্রোহী নিহত হন, ১৩ মার্চ আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়। সংঘর্ষের পর পাকিস্তান সরকার দাবি করেছিল, হাইজ্যাকের সংকট শেষ হয়েছে এবং সব যাত্রী নিরাপদে মুক্তি পেয়েছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এর কোনও প্রমাণ প্রকাশ করা হয়নি।
এদিকে, বিএলএ বিদ্রোহীরা পাকিস্তানের এই দাবিকে “ডাহা মিথ্যা” বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, পাকিস্তান সরকার নিজেদের সেনাদের নিয়েই উদাসীন, তাই তারা শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজছে না। বালোচিস্তানে দীর্ঘদিন ধরেই বিচ্ছিন্নতাবাদী লড়াই চলছে। তবে জাফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাক কাণ্ড পাকিস্তানের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, একদিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, অন্যদিকে বিএলএ-র পক্ষ থেকে হত্যার এমন দাবি আন্তর্জাতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এখন দেখার, পাকিস্তান সরকার এই ঘটনার কোনও প্রামাণ্য তথ্য সামনে আনে কি না এবং সেনাবাহিনীর ব্যর্থতার বিষয়ে কী ব্যাখ্যা দেয়।