পাকিস্তানের (Pakistan) উত্তর ওয়াজিরিস্তানে ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলায় রক্তে ভেসে গেল সেনা কনভয়। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের এই জঙ্গিপ্রবণ এলাকায় শনিবার এক আত্মঘাতী জঙ্গি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে সরাসরি ধাক্কা মারে সেনাবাহিনীর কনভয়ে। ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৩ জন সেনা সদস্য, আহত আরও ১০ জন। পাশাপাশি বিস্ফোরণের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয় (Pakistan) ঘরবাড়ি, আহত হয়েছেন ১৯ জন বেসামরিক নাগরিক, যার মধ্যে রয়েছে ৬ জন শিশু।
এএফপি সংবাদ সংস্থাকে স্থানীয় এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এক আত্মঘাতী হামলাকারী বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি নিয়ে সেনাবাহিনীর (Pakistan) কনভয়ের ওপর আঘাত হানে। এতে ১৩ জন সেনার মৃত্যু হয়েছে এবং ১০ সেনা সদস্য গুরুতর জখম হয়েছেন। একই সঙ্গে ১৯ জন সাধারণ মানুষও আহত হয়েছেন।”
খাইবার পাখতুনখোয়ার (Pakistan) এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশেপাশের দুটি ঘরের ছাদ ভেঙে পড়ে, এবং সেই ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আহত হয় ছয় শিশু।
সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, আহত সেনাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তান (Pakistan) তালিবানের (TTP) ঘনিষ্ঠ হাফিজ গুল বাহাদুর গোষ্ঠীর আত্মঘাতী ইউনিট।
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পাকিস্তানের সীমান্ত অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ইসলামাবাদ বরাবরই অভিযোগ করে এসেছে, কাবুল প্রশাসন জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে এবং সেখান থেকেই চালানো হচ্ছে সীমান্তপারের হামলা। যদিও আফগান তালিবান এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।
এএফপি-র তথ্য অনুসারে, চলতি বছর খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে এখন পর্যন্ত ২৯০ জনের বেশি মানুষ (প্রধানত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য) নিহত হয়েছেন সন্ত্রাসবাদী হামলায়।
গত মার্চ মাসেই পাকিস্তান সেনা দাবি করে, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে জামদোলা চেকপোস্টের কাছে ফ্রন্টিয়ার কর্পস ক্যাম্পে আত্মঘাতী হামলার পর পাল্টা অভিযানে ১০ জন জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে।
সেই মাসেই বেলুচ লিবারেশন আর্মির (BLA) জঙ্গিরা গুদালার ও পিরু কুন্ড়ি অঞ্চলে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন লক্ষ্য করে ভয়ঙ্কর হামলা চালায়, যেখানে প্রাণ হারান ২১ জন যাত্রী এবং ৪ জন আধাসামরিক কর্মী।
সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স ২০২৫ অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যেখানে এই সংখ্যাটা ছিল ৭৪৮, সেখানে ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১,০৮১। সন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় পাকিস্তান এখন বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে।