আফগানিস্তানে আবারও মহিলাদের ওপর কড়া নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছে তালিবান (Taliban)। দ্য গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, তালিবান (Taliban) এবার গোপনে চালু থাকা বিউটি পার্লার বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে— যেসব মহিলা মালিক এখনো বিউটি পার্লার চালাচ্ছেন, তাদের হয় গ্রেপ্তার করা হবে, নয়তো কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালেই আফগানিস্তানে সব বিউটি পার্লার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল তালিবান (Taliban)। তবে জীবিকার তাগিদে অনেক মহিলা গোপনে ভূগর্ভস্থ বা গোপন জায়গায় এই ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এবার সেই আশ্রয়ও শেষ করে দিতে চাইছে তালিবান (Taliban)।
২০২১ সালে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তালেবান নারীদের জন্য একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে— শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র, এমনকি প্রকাশ্যে বেরোনোতেও কড়া সীমাবদ্ধতা। বিউটি পার্লার, যেখানে মহিলারা চুল কাটা, মেকআপ ও সাজগোজের সুযোগ পেতেন, তা তালিবানের চোখে ইসলামি আইনবিরোধী। তাই নারীদের জন্য ছোট্ট এই আশ্রয়কেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দ্য গার্ডিয়ান জানাচ্ছে, তালেবান এখন দেশজুড়ে গ্রামপ্রধান ও সমাজপতিদের নির্দেশ দিয়েছে গোপন বিউটি স্যালুন চিহ্নিত করে “গুণ ও পাপবিচার” পুলিশের হাতে তুলে দিতে।
৩৮ বছর বয়সী ফ্রেশতা নামের এক নারী দ্য গার্ডিয়ান-কে বলেছেন, “ পার্লার বন্ধ হওয়ার পর আমি ভীষণ কষ্টে পড়েছি। আমার স্বামী অসুস্থ, সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলাম আমি। আমার তিন সন্তান আছে, তাদের খরচ চালাতে হতো। তাই ঝুঁকি নিয়েও পার্লার চালাতাম।”
তিনি আরও বলেন, “আমার কাছে শুধু অর্থের ব্যাপার নয়, যখন আমি কোনো মহিলাকে সাজিয়ে দিতাম আর তিনি আয়নায় নিজেকে দেখে হাসতেন, সেই সুখ আমার সুখ হয়ে যেত। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, আর পারব না। কারণ ঝুঁকি খুব বেশি। অথচ আমি অন্য কোনো কাজ জানি না। আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো—এই দুনিয়ায় আমাদের কণ্ঠ কেউ শোনে না, কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায় না।”