বুধবার দুবাইয়ে ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি এবং তালিবান (Taliban) সরকারের বিদেশমন্ত্রীর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর তালিবানের (Taliban) বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ভারতকে তারা ‘গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সহযোগী’ হিসেবে দেখে। তালিবানের (Taliban) সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক বৈঠক পাকিস্তান ও ভারতকে নতুন করে চাপে ফেলবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
২০২১ সালে তালিবান ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানের আশরাফ গনি সরকারের কূটনীতিকরা ভারত ছাড়িয়ে অন্য দেশে আশ্রয় নেন। দিল্লি আজ পর্যন্ত আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি, তবে সম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং মাঝে মধ্যেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এবার, প্রথমবারের মতো এই বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে।
এতদিন পর কেন প্রকাশ্যে আসল সম্পর্ক?
এখন প্রশ্ন উঠছে, কেন এভাবে সরাসরি প্রকাশ্যে তালিবান সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরা হলো? বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং পাকিস্তানের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতিই এর মূল কারণ হতে পারে।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনাহীন সরকার গঠন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানো নতুন প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভারতের জন্য একটি চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশহাক দার বাংলাদেশের সফর এবং চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তানি জাহাজের উপস্থিতি ভারতকে উদ্বেগিত করছে।
এ পরিস্থিতিতে, ভারত আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক জোরালো করতে আগ্রহী হতে পারে। পাকিস্তান-তালিবান সম্পর্কের অবনতির মধ্যে, তালিবানকে ভারতের কূটনৈতিক প্রভাবিত করার মাধ্যমে পাকিস্তানকে একাধিক বার্তা পাঠানো সম্ভব হবে। এই পদক্ষেপকে অনেকেই ভারতের জন্য একটি ‘মাস্টারস্ট্রোক’ হিসেবে দেখছেন। গত বছর তালিবান আফগানিস্তানে ভারতের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করেছিল। তবে ভারত এখনও আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। এ বৈঠকের পর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সম্পর্কের গতি এবার অন্য দিকে মোড় নিতে পারে কি না, তা দেখা প্রয়োজন।