পাকিস্তানের (Pakistan) দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশের খুজদার জেলায় একটি স্কুলবাসে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় অন্তত চারজন শিশু এবং দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার (Pakistan) সকালে, যখন বাসটি একটি স্কুলের দিকে যাচ্ছিল, যেটি সেনাবাহিনীর কর্মীদের সন্তান এবং স্থানীয় বেসামরিক পরিবারগুলোর শিশুদের জন্য নির্ধারিত (Pakistan) । বাসচালক এবং তাঁর সহকারীও প্রাণ হারিয়েছেন।
একজন প্রবীণ পুলিশ কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “মোট ছয়জন নিহত হয়েছেন এবং আহতের সংখ্যা দুই ডজনেরও বেশি।” পাকিস্তান (Pakistan) সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পরে দেওয়া এক বিবৃতিতে মৃত্যুর সংখ্যা পাঁচ বলে জানানো হয়, যার মধ্যে তিনজন শিশু রয়েছে।
ঘটনার পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে একটি স্কুলবাস সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে আছে। পাশে ছড়িয়ে আছে শিশুদের স্কুলব্যাগ। এই দৃশ্য দেখে গোটা পাকিস্তান স্তব্ধ হয়ে গেছে।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে মনে করছে, এটি একটি আত্মঘাতী হামলা। তবে হামলাকারীর পরিচয় ও উদ্দেশ্য এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। বেলুচিস্তান প্রদেশটি বহু বছর ধরেই সহিংসতা এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দু। এখানকার সবচেয়ে সক্রিয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী হলো বেলুচ লিবারেশন আর্মি (BLA)।
BLA সাধারণত নিরাপত্তা বাহিনী ও বাইরের অঞ্চল থেকে আসা মানুষদের টার্গেট করে হামলা চালায়। মাত্র কয়েক মাস আগেই, মার্চ মাসে, তারা শত শত যাত্রীসহ একটি ট্রেন দখল করেছিল এবং সেই ঘটনায় বহু সশস্ত্র জঙ্গি ও নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়। এই হামলার পেছনে এখনও পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি। তবে স্থানীয় প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনী BLA-কে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে বিবেচনা করছে।
পাকিস্তানে স্কুলে হামলার ইতিহাস অত্যন্ত বেদনাদায়ক। ২০১৪ সালে পেশাওয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুলে তালেবান জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ১৫০-এর বেশি মানুষকে হত্যা করে, যাদের বেশিরভাগই ছিল শিশু। সেই নারকীয় ঘটনার পর পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী তৎপরতা ব্যাপকভাবে জোরদার করা হয়েছিল। কিন্তু বেলুচিস্তান এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এখনো সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।
আহত শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করা হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে দেশজুড়ে নিন্দা ও শোক প্রকাশ করা হয়েছে। বহু মানুষ প্রশ্ন তুলছেন—স্কুলগামী শিশুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ কেন সরকার?