ছাত্র আন্দোলনের ফসল হিসেবে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে এবার কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল সেই আন্দোলনেরই ছাত্ররা (Bangladesh)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রাক্তন ছাত্রনেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা হলে, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রশাসনকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাতে প্রস্তুত তাঁরা (Bangladesh)। আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পক্ষ থেকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে প্রশাসনকে (Bangladesh)।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাবি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কালীমন্দির গেটের সামনে দুষ্কৃতীদের হামলায় নিহত হন সাম্য। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র এবং স্যার এ এফ রহমান হলের ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর আরও দুই বন্ধু।
পুলিশ এখনও পর্যন্ত তিন অভিযুক্ত— তামিম হাওলাদার (৩০), সম্রাট মল্লিক (২৮), ও পলাশ সর্দার (৩০)—কে গ্রেফতার করেছে। তাঁরা বর্তমানে আদালতের নির্দেশে হাজতে রয়েছেন। তবে, ছাত্রদের অভিযোগ, মূল অভিযুক্তরাই এখনও অধরা, এবং পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে সময় নষ্ট করছে।
আজ দুপুরে রাজু ভাস্কর্য থেকে একটি বিশাল মিছিল এসে পৌঁছায় শাহবাগ থানার সামনে। থানা ঘেরাও করে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। একইসঙ্গে, থানার ভিতরে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে এক প্রতিনিধিদল।
বৈঠক শেষে বিক্ষোভকারীদের তরফে জানানো হয়, পুলিশের তদন্তে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। তাঁদের দাবি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাঁরা বেআইনি কার্যকলাপ চালায়, তাঁরাই এই খুনের পিছনে রয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশ তাঁদের সম্পর্কে সব জানলেও ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
ছাত্রদের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, সাম্য হত্যা মামলায় যে ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের সকলকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। না হলে, তাঁরা সরকার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে সরাসরি দায়ী করে আন্দোলনের নতুন রূপরেখা ঘোষণা করবেন।
বিক্ষোভরত ছাত্রদের বক্তব্য, “শাহরিয়ার আলম সাম্যের মতো ছাত্রদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই ‘জুলাই আন্দোলন’ হয়েছিল। সেই আন্দোলনের ফলেই আজ নতুন সরকার এসেছে। অথচ, সাম্যের হত্যার ঘটনায় এই সরকার উদাসীন। আমরা এই অমানবিক নীরবতা ও গড়িমসি মেনে নেব না।”
তাঁরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, “ছাত্রের লাশ নিয়ে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না। প্রয়োজনে লাগাতার আন্দোলন চলবে। আমাদের সহনশীলতার পরীক্ষা নেওয়া চলবে না।”
বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে এক নতুন উত্তাল অধ্যায়ের সূচনা করল সাম্য হত্যাকাণ্ড। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসনের পদক্ষেপেই স্থির হবে, এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ গতিপথ।