বাংলাদেশে (Bangladesh) সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়নের অভিযোগ নতুন করে তীব্র হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের মহাসচিব ও বাংলাদেশ (Bangladesh) অশ্বিনী সেবা আশ্রমের সভাপতি কপিল কৃষ্ণ মণ্ডলকে। বাগেরহাটের চিতলমারী থানার পুলিশ ১৫ মার্চ ভোর রাতে তাকে গ্রেফতার করে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম (Bangladesh)।
পুলিশের দাবি, কপিল কৃষ্ণ মণ্ডলের মোবাইল থেকে বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে সন্দেহভাজন বৈঠকের ছবি ও কথোপকথনের তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণেই তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে একই অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন হিন্দু ধর্মগুরু চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভু। ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের সমাবেশে বক্তব্য রাখার পর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ ওঠে। বিএনপি নেতা ফিরোজ খান এই অভিযোগ এনে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেন।
এরপর, ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গোয়েন্দা সংস্থা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে এবং চট্টগ্রামে নিয়ে যায়। গ্রেফতারের পরদিন চট্টগ্রাম আদালতের বাইরে প্রতিবাদ করতে এলে পুলিশের লাঠিচার্জে এক আইনজীবী নিহত হন। এই ঘটনায় আরও ২১ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে গ্রেফতার করা হয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর থেকে হিন্দু মন্দির, বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগ উঠেছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের চাকরিজীবীদের ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে জোরপূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এমনকি ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা চলছে বলেও দাবি করেছেন সংখ্যালঘু নেতারা।
চট্টগ্রামে হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর সেনা সদস্যদের হামলার অভিযোগ ওঠার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এই আবহে বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবিতে মৌলবাদীরা রাস্তায় নামে। কট্টরপন্থী সংগঠনের নেতা সারজিস আলম সম্প্রতি ইসকন ও হিন্দুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছেন।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর চলতে থাকা নির্যাতন ও গ্রেফতার নিয়ে ভারত আগেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে ভারত সরকার একাধিক বিবৃতি দিয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশের মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন শহরেও বিক্ষোভ হয়েছে। প্রতিবাদকারীরা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছেন।