বৃহস্পতিবার ব্রিটেন সফরে গিয়ে এক হৃদয়স্পর্শী ও হাস্যকর মুহূর্তের সাক্ষী থাকলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Modi) এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ঐতিহাসিক ভারত-ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) স্বাক্ষরের পর যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে বক্তৃতা চলাকালীন হঠাৎই সমস্যায় পড়েন অনুবাদক। ইংরেজি বক্তব্য হিন্দিতে অনুবাদ করতে গিয়ে কিছুটা গুলিয়ে ফেলেন তিনি (PM Modi)।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বক্তব্য রাখছিলেন, সেই সময় অনুবাদক সেই বক্তব্য হিন্দিতে অনুবাদ করতে গিয়ে থমকে যান। তাঁকে বেশ নার্ভাস দেখাচ্ছিল। সেই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী মোদী (PM Modi) পরিবেশ হালকা করতে হেসে বলেন, “চিন্তা করবেন না, মাঝে মাঝে ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করলেও চলবে, চিন্তার কিছু নেই।” অনুবাদকও তখন লজ্জায় বলেছিলেন, “স্যরি, হিজ এক্সেলেন্সি… আমি বক্তৃতাটা হারিয়ে ফেলেছি।” উত্তরে মোদী সান্ত্বনাসূচক ভঙ্গিতে বলেন, “কোনও সমস্যা নেই।”
পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক করে তোলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার নিজেই। তিনি (PM Modi) বলেন, “আমরা দু’জনেই একে অপরকে যথেষ্ট ভালো বুঝি… এগিয়ে যেতে কোনও অসুবিধা নেই।” পুরো মুহূর্তটি ক্যামেরাবন্দি হয় এবং সংবাদ সংস্থা ANI তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতেই মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়।
#WATCH | “Don’t bother, we can use English words in between. Don’t worry about it,” says PM Narendra Modi candidly as translations for questions and answers were made at their press statement and the journalists’ questions that followed.
“I think we understand each other well,”… pic.twitter.com/VUe2wqQllG
— ANI (@ANI) July 24, 2025
এই হাস্যরসাত্মক মুহূর্তের বাইরে দিনটি ছিল ঐতিহাসিকও। ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে বহু প্রতীক্ষিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় আজ। এই চুক্তি ভারতীয় বস্ত্র, জুতো, রত্ন ও গয়না, সামুদ্রিক খাদ্যপণ্য ইত্যাদিকে ব্রিটিশ বাজারে আরও সহজ প্রবেশাধিকার দেবে। মোদী জানান, এই চুক্তি কেবলমাত্র অর্থনৈতিক নয়, এটি এক যৌথ সমৃদ্ধির পরিকল্পনাও বটে। তিনি (PM Modi) বলেন, “এই চুক্তি ভারতীয় যুবক, কৃষক, মৎস্যজীবী এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে বিশেষভাবে উপকৃত করবে।”
প্রতি বছর প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকছে এই চুক্তিতে (PM Modi)। আশা করা হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণ হয়ে ৬০ বিলিয়ন ডলার থেকে ১২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। ভারতের ৯৯% রপ্তানি পণ্য এতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। অপরদিকে ব্রিটিশ পণ্যের মধ্যে হুইস্কি, গাড়ি এবং চিকিৎসা সামগ্রীর মতো পণ্যের রপ্তানি ভারতে সহজতর হবে।
এই ঐতিহাসিক দিনের সাক্ষী হয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার প্রকাশে আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল—ভারত ও ব্রিটেনের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উঠছে।