আবারও যুদ্ধের মুখে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান (Pakistan-Afghanistan Tension)। বুধবার এক বিস্ফোরক মন্তব্যে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “পাকিস্তান চাইলে তার অস্ত্রভাণ্ডারের সামান্য অংশ ব্যবহার করেই আফগান তালিবান শাসনকে সম্পূর্ণ ধ্বংস (Pakistan-Afghanistan Tension) করে দিতে পারে, ওদের আবার পাহাড়ের গুহায় পালিয়ে যেতে হবে।”
এই হুমকি এসেছে এমন এক সময়, যখন ইস্তানবুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে শান্তি (Pakistan-Afghanistan Tension) আলোচনা কার্যত ভেস্তে গেছে। তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় হওয়া এই বৈঠকের লক্ষ্য ছিল সাম্প্রতিক সীমান্ত রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা। কিন্তু আলোচনার পর কোনও সমাধান বেরোয়নি।
পাকিস্তানের তথ্য মন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার জানিয়েছেন, আলোচনায় আফগান প্রতিনিধি দল মূল ইস্যু এড়িয়ে গিয়ে “দোষারোপের রাজনীতি” করেছে। তিনি বলেন, “আফগান পক্ষ কোনও নিশ্চয়তা দেয়নি, বরং মূল সমস্যার থেকে সরে গিয়ে অভিযোগ আর প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে।”
তারার আরও জানান, “আমরা শান্তির মনোভাব নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়েছিলাম, কিন্তু কাবুল সরকার এখনও পাকিস্তানবিরোধী সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন দিচ্ছে। আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ আমরা নেব।”
তথ্য মন্ত্রীর এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফের কড়া সতর্কবার্তা আসে। তিনি বলেন, “পাকিস্তানকে প্ররোচিত করলে আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেওয়া হবে।”
এই মন্তব্যের পেছনে প্রেক্ষাপট আরও ভয়াবহ (Pakistan-Afghanistan Tension)। অক্টোবরে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি ও বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৭০ জন, আহত শতাধিক। এরপর ১৯ অক্টোবর দোহায় একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও সেটি স্থায়ী হয়নি।
ইস্তানবুলের আলোচনাকে নতুন সূচনার আশায় দেখা হচ্ছিল, কিন্তু তা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়। দু’দেশই একে অপরকে দোষ দিচ্ছে চুক্তি ভঙ্গের জন্য। পাকিস্তানের অভিযোগ (Pakistan-Afghanistan Tension), আফগান মাটিতে নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (TTP) অবাধে কাজ করছে এবং আফগান সরকার তাদের আশ্রয় দিচ্ছে। অন্যদিকে, আফগান প্রতিনিধি দল মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছে, “আমরা TTP-র কার্যকলাপের উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ রাখি না।”
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যখন কয়েকদিন আগে পাকিস্তানি বিমান বাহিনী কাবুলসহ আফগানিস্তানের একাধিক জায়গায় বিমান হামলা চালায়, লক্ষ্য ছিল TTP-র নেতারা। পাল্টা জবাবে আফগান তালিবান সীমান্তে পাকিস্তানি সেনা পোস্টে হামলা চালায়। শুরু হয় ভয়াবহ সংঘর্ষ, যার জেরে কিছু সময়ের জন্য সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায়।
দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের এই সংঘাত এখন নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্বের এই সরাসরি যুদ্ধ হুমকি কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও গভীর সংকটে ফেলবে। ইস্তানবুলে আলোচনার ব্যর্থতা যেন দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য বৃহৎ সংঘর্ষের পূর্বাভাসই দিচ্ছে।












