নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের (NYC Mayor) ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে চমক দেখিয়ে জয়ী হওয়ার পর ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম প্রার্থী জোহরান মামদানিকে ঘিরে একের পর এক বর্ণবিদ্বেষী ও ইসলামবিদ্বেষী আক্রমণ শুরু হয়েছে। তবে নির্বাচনী উপাত্ত বলছে, এসব আক্রমণ সত্ত্বেও মামদানি (NYC Mayor) কেবল এশীয়ই নয়, শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের মধ্যেও উল্লেখযোগ্য সমর্থন পেয়েছেন।
এটাই প্রথমবার, যখন ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষ থেকে একজন মুসলিম (NYC Mayor), এবং সম্ভাব্যভাবে প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি, নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হওয়ার দৌড়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রাক্তন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো (NYC Mayor) বুধবার পরাজয় স্বীকার করে নেওয়ার পর মামদানির জয় নিশ্চিত হয়।
নির্বাচনের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, শ্বেতাঙ্গ বা ককেশিয়ান ভোটারদের মধ্যে ৩৬% মামদানিকে (NYC Mayor) সমর্থন দিয়েছেন, যেখানে কুয়োমো পেয়েছেন মাত্র ২৫%। উল্লেখযোগ্যভাবে, মামদানি এশীয় ভোটারদের কাছ থেকে ৫৮% সমর্থন পেয়েছেন, যেখানে কুয়োমো পেয়েছেন মাত্র ১৬%। মামদানির মা বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক মীরা নায়ার। তিনি মূলত উর্দু ও হিন্দিতে বলিউড থিমে তৈরি প্রচার-ভিডিওর মাধ্যমে দক্ষিণ এশীয় সম্প্রদায়কে আকৃষ্ট করেন।
নিউইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, মামদানি (NYC Mayor) ব্রুকলিন ও ফোর্ট গ্রিনের মতো লিবারেল, শ্বেতাঙ্গপ্রধান এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। পাশাপাশি, কৃষ্ণাঙ্গ ও হিস্পানিক অধ্যুষিত এলাকাতেও তিনি উল্লেখযোগ্য ভোট পেয়েছেন।
উপাত্ত অনুযায়ী, মামদানি হিস্পানিক বা লাতিনো ভোটারদের মধ্যে ৩০% সমর্থন এবং কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে ২১% সমর্থন পেয়েছেন। সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউইয়র্কের জন মোলেনকফ বলেন, “মামদানি যেভাবে নানা জাতিগোষ্ঠীর সমর্থন পেয়েছেন, তা প্রত্যাশার থেকেও বিস্তৃত।”\

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জ্যাকারি ডোনিনি এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ লিখেছেন, “আর্থিকভাবে স্বচ্ছল শ্বেতাঙ্গ, হিস্পানিক ও এশীয়দের সমর্থন নিয়ে মামদানি কুয়োমোকে পরাজিত করেছেন। কুয়োমো কেবল কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যেই এগিয়ে ছিলেন।”
মামদানি তাঁর প্রচারে ‘আফোর্ডেবিলিটি’ বা নাগালের মধ্যে থাকা জীবনযাত্রার বিষয়টিকে মূল বার্তা হিসেবে তুলে ধরেন, যা বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে সাড়া ফেলে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর সক্রিয় উপস্থিতিও তরুণ পেশাজীবীদের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করতে সহায়তা করে।
ফলাফলেও এই প্রবণতা স্পষ্ট হয়েছে। তরুণ ভোটারদের অধ্যুষিত এলাকায় মামদানির ফল ভালো হয়েছে, অন্যদিকে কুয়োমো বর্ষীয়ান জনগোষ্ঠীর এলাকায় এগিয়ে ছিলেন।
সবমিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, মামদানি সেই সব জনগোষ্ঠীর ভোট পেয়েছেন যারা ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের থেকে কিছুটা সরে গিয়েছিলেন— যেমন তরুণ, এশীয় ও লাতিনো ভোটাররা।