টুইটার (বর্তমানে এক্স)-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসের হাত ধরে এল এক যুগান্তকারী মেসেজিং অ্যাপ—নাম ‘বিটচ্যাট’ (Bitchat)। এই অ্যাপ ইতিমধ্যেই প্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা মহলে তীব্র কৌতূহল তৈরি করেছে। কারণ, এটি এমন এক মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে নেই নজরদারির কোনও সুযোগ, নেই ফোন নম্বর বা ইমেল আইডির প্রয়োজন, এমনকি ইন্টারনেট ছাড়াও দিব্যি চলবে এই অ্যাপ (Bitchat)!
সম্পূর্ণ ‘ডিসেন্ট্রালাইজড’ এই পিয়ার-টু-পিয়ার মেসেজিং অ্যাপ তৈরি হয়েছে এমন প্রযুক্তিতে, যাতে কোনও তৃতীয় পক্ষ— এমনকি সরকারের পক্ষ থেকেও নজরদারি চালানো কার্যত অসম্ভব (Bitchat)। সাধারণভাবে হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারের মতো অ্যাপগুলি এনক্রিপশন প্রযুক্তি ব্যবহার করলেও প্রশাসনের হাতে থাকছে শেষ পর্যন্ত কিছুটা নিয়ন্ত্রণের সুযোগ। কিন্তু বিটচ্যাট নিজেকে রাখছে সেই সমস্ত নিয়ন্ত্রনের বাইরেই (Bitchat)।
এই অ্যাপ চালাতে ব্যবহারকারীর ফোন নম্বর বা ইমেল আইডিরও দরকার নেই। এর সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক হল— এটি ইন্টারনেট ছাড়াই কাজ করতে সক্ষম (Bitchat)। এর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে ‘ব্লুটুথ মেশ নেটওয়ার্ক’, ‘রিলে অ্যান্ড স্টোর ফরোয়ার্ড’ প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নিজেদের মধ্যে মেসেজ আদানপ্রদান করতে পারবেন। মেসেজ জমা থাকবে না কোনও কেন্দ্রীয় সার্ভারে, এবং কিছু সময় পরেই নিজে থেকেই ডিলিট হয়ে যাবে (Bitchat)।
জ্যাক ডরসে এক্স-এ একটি পোস্টে জানিয়েছেন, ব্যবহারকারীরা বিটচ্যাটে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে নিরাপদ ‘চ্যাটরুম’ তৈরি করতে পারবেন। চাইলে পাসওয়ার্ডও ব্যবহার করে সেই চ্যাটরুম সুরক্ষিত করা যাবে। প্রেরক ও প্রাপক ছাড়া কেউই মেসেজ পড়তে পারবে না, এমনকি অ্যাপের নির্মাতারাও নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার বিরোধী আন্দোলন বা প্রতিবাদের সময়ে যেভাবে অনেক দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়, সেই পরিস্থিতিতে এই ধরনের অ্যাপ কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। উল্লেখযোগ্য, ২০১৯ সালে হংকংয়ে আন্দোলনের সময় ব্লুটুথ নির্ভর এই ধরণের অ্যাপের ব্যবহার দেখা গিয়েছিল।
বিটচ্যাটের বেটা ভার্সন আপাতত লঞ্চ হয়েছে। ভবিষ্যতে এতে ‘Wi-Fi Direct’ ফিচারও যুক্ত হবে বলে জানা গেছে, যা মেসেজ পাঠানোর গতি ও ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তুলবে।
এই অ্যাপ প্রযুক্তির জগতে নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চলেছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।