বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) চার দিনের জাপান সফর সেরে দেশে ফিরছেন। সফরকালে যোগ দিয়েছিলেন টোকিওতে আয়োজিত নিক্কেই সম্মেলনে। সেখানেই তাঁর সাক্ষাৎ হয় জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবারের সঙ্গে (Muhammad Yunus)। তবে কূটনৈতিক সৌজন্য কিংবা সম্মেলন ছিল বাইরের দিক। আসল খবর, এই সফরের ফলাফল কতটা তাৎপর্যপূর্ণ।
মহম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) নিজেই সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন, জাপান সরকার বাংলাদেশের বাজেট সহায়তা হিসাবে ১০০ কোটিরও বেশি মার্কিন ডলার দিতে চলেছে। এই অর্থের বড় অংশ ব্যয় হবে দেশের রেলব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য। পাশাপাশি, বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতি শক্তিশালী করতে অতিরিক্ত ৪০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে জাপান।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল, জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত প্রায় ১৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল সম্প্রসারণ প্রকল্পে জাপান বিনিয়োগ করবে ৬৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই একই প্রকল্পে ২০২১ সালে চিন অর্থসাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে তারা পিছিয়ে যায়। সেই সময় বাংলাদেশ বিকল্প পথ খুঁজতে গিয়ে জাপানের সঙ্গে কথা বলে এবং জাপানি টিম বাংলাদেশে এসে প্রকল্প পরিদর্শনও করে। এবার সেই প্রকল্পে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে অর্থ ঢালতে রাজি হয়েছে।
শুধু রেল নয়, আরও উন্নয়ন পরিকল্পনাও রয়েছে। বাংলাদেশের নৌসেনাকে পাঁচটি পেট্রোলিং বোট দেওয়ার কথা বলেছে জাপান। এছাড়াও বাংলাদেশে একটি সাইকেল তৈরির কারখানা গড়ে তুলবে তারা, যা কর্মসংস্থানের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ সরকারের প্রেসসচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাপানিদের বৈঠক অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। দুই দেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক যে আরও গভীর হয়েছে, সে ইঙ্গিতও মিলছে।
বিক্ষোভ, চাপ, সমালোচনার আবহে বিদেশ সফরে গিয়ে এই আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করা নিঃসন্দেহে ইউনূসের বড় প্রাপ্তি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।