নিউইয়র্ক সিটির ডেমোক্র্যাটিক মেয়র প্রাইমারিতে চমক দেখিয়ে জয়ী হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ফিল্মমেকার মীরা নায়ারের পুত্র জোহারান মামদানি (Mamdani)। ৩৩ বছর বয়সী মামদানি (Mamdani) এখন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে আলোচিত রাজনৈতিক পদগুলোর একটিতে পৌঁছানোর দোরগোড়ায়। নভেম্বরেই হবে মূল নির্বাচন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই উচ্চাভিলাষী যাত্রার পরিকল্পনা তিনি বহু আগেই শুরু করেছিলেন।
তার ২০২০ সালের এক পুরনো এক্স (তৎকালীন টুইটার) পোস্ট এখন ভাইরাল, যেখানে তিনি (Mamdani) ভারতের কেরালার ২১ বছর বয়সী মেয়র আর্যা রাজেন্দ্রনের প্রসঙ্গে কথা বলেন। সিপিআই(এম) পুডুচেরির একটি পোস্ট শেয়ার করে মামদানি(Mamdani) লিখেছিলেন, “এখন নিউইয়র্ক সিটির কী ধরনের মেয়র দরকার?” সেই পোস্টে বলা হয়েছিল, “কমরেড আর্যা রাজেন্দ্রন, বয়স ২১, কেরালার থিরুভনন্তপুরমের নতুন মেয়র। বিশ্বের সবচেয়ে কমবয়সী মেয়রদের একজন।”
জয়ের পর থেকে জোহারান মামদানিকে নানা বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে (Mamdani)। তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি এবং রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে তাকে “কমিউনিস্ট” বলে কটাক্ষ করেছেন অনেকেই। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে শুরু করে নিউইয়র্ক সিটির বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস পর্যন্ত তাকে (Mamdani) সমালোচনার মুখে ফেলেছেন।
উগান্ডায় জন্ম নেওয়া মামদানি সাত বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন (Mamdani)। তিনি নিজেকে সোশ্যালিস্ট বলে পরিচয় দেন। তিনি বিবাহিত সিরীয়-মার্কিন শিল্পী রামা দুয়াজির সঙ্গে (Mamdani)।

অন্যদিকে, যাঁর কথা মামদানি (Mamdani) উল্লেখ করেছিলেন সেই আর্যা রাজেন্দ্রন ভারতের সবচেয়ে কমবয়সী মেয়র হিসেবে ইতিহাস গড়েন। ১৯৯৯ সালে জন্ম নেওয়া আর্যা মাত্র ২১ বছর বয়সে থিরুভনন্তপুরম কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। এর আগে এই রেকর্ড ছিল মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের, যিনি ২৭ বছর বয়সে নাগপুরের পৌরনিগম পরিচালনা করেন।
সিপিআই(এম)-এর নেত্রী আর্যা কেরালার মুদাভানমুগল ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়েছিলেন। গণিতের ছাত্রী আর্যা রাজেন্দ্রন নায়ার সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত এবং ছোটবেলা থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি পঞ্চম শ্রেণি থেকে বালসঙ্ঘমে যুক্ত হন এবং পরবর্তীতে সেখানকার রাজ্য সভাপতি হন। এছাড়াও তিনি এসএফআই-এর রাজ্য কমিটির সদস্য এবং সিপিআই(এম)-এর থিরুভনন্তপুরম এলাকার কমিটির সদস্য ছিলেন।
তিনি বিবাহিত কেরালার সবচেয়ে কমবয়সী বিধায়ক সাচিন দেবের সঙ্গে। ২০২৩ সালে এক মাসের সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে অফিসে কাজ করার একটি ছবি ভাইরাল হয়, যা দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।
২০২৪ সালে তিনি সিপিআই(এম)-এর থিরুভনন্তপুরম জেলা কমিটিতে নির্বাচিত হন। মেয়র হিসেবে তিনি শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নের ওপর জোর দিয়েছেন। কোভিড-১৯ মহামারির সময় তিনি শহরের সমস্যাগুলো নিয়ে সরব হন এবং বৈজ্ঞানিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দাবি জানান। এছাড়াও তিনি প্রান্তিক মানুষের জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা প্রাইমারি হেলথ সেন্টার চালুর দাবি জানান।
যদিও বাস আটকে রাখার অভিযোগে একবার বিতর্কে জড়ান, তার মেয়র হিসেবে কার্যকাল এখনো পর্যন্ত স্বচ্ছ বলে বিবেচিত।