মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলসে (Los Angeles) ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন রাখতে পারবেন—এমনটাই জানিয়েছে দেশটির একটি উচ্চ আদালত। শুক্রবার নবম মার্কিন সার্কিট কোর্ট অব অ্যাপিলস একটি নিম্ন আদালতের নির্দেশকে সাময়িকভাবে স্থগিত করে, যেখানে ট্রাম্পের এই সেনা মোতায়েনের উপর (Los Angeles) নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
এই রায় চূড়ান্ত নয়, তবে ট্রাম্পের জন্য এটি আপাতত একটি আইনি স্বস্তি। তিনি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লেখেন: “আমরা এল.এ.কে (Los Angeles) বাঁচালাম। এই রায়ের জন্য ধন্যবাদ!!!”
উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পের ইমিগ্রেশন রেইডের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে এবং লস অ্যাঞ্জেলসে (Los Angeles) তা আরও জোরদার হচ্ছে। এই ঘটনার বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিক্রিয়া ট্রাম্প জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সবচেয়ে প্রবল।
শনিবার আরও বড় বিক্ষোভের আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, শুধু ইমিগ্রেশন ইস্যু নয়, ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিতব্য মার্কিন সেনাবাহিনীর ২৫০তম বার্ষিকীর মিলিটারি প্যারেডের বিরুদ্ধেও মানুষ রাস্তায় নামতে চলেছে।
একটি প্রতিবাদী সংগঠন ‘নো কিংস’ তাদের ওয়েবসাইটে লিখেছে, “ওরা আমাদের আদালতের আদেশ অমান্য করছে, আমেরিকান নাগরিকদের পর্যন্ত জোর করে বহিষ্কার করছে, লোকজনকে রাস্তা থেকে তুলে নিচ্ছে, নাগরিক অধিকার ছিঁড়ে ফেলছে, আর সরকারি পরিষেবায় কাঁচি চালাচ্ছে।”
এই বিক্ষোভের মধ্যেই শুক্রবার লস অ্যাঞ্জেলসে(Los Angeles) ৭০০ জন ইউএস মেরিন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে, যা আমেরিকার ইতিহাসে অন্যতম নজিরবিহীন ঘটনা—এত বড় আকারে সেনা মোতায়েন মূলত যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেখা যায়।
লস অ্যাঞ্জেলসের ডাউনটাউনের একটি ফেডারেল আটক কেন্দ্রের বাইরে সৈন্যরা প্রহরায় রয়েছেন, যেখানে অনেক অভিবাসীকে আটকে রাখা হয়েছে এবং সেখানেই বেশিরভাগ বিক্ষোভ হয়েছে।
যদিও বেশিরভাগ বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ, কিছু সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষোভ এখন পর্যন্ত শহরের কয়েকটি ব্লকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

শুধু লস অ্যাঞ্জেলস (Los Angeles) নয়, নিউ ইয়র্ক এবং শিকাগোতেও এই সপ্তাহে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE)-এর সঙ্গে একত্রে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যরা অভিবাসীদের ধরতে অভিযানেও অংশ নিচ্ছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট নেতা এবং লস অ্যাঞ্জেলসের মেয়র কারেন বাস বলেছেন:
“শান্তি তখনই আসবে, যখন ICE লস অ্যাঞ্জেলস ছেড়ে যাবে।”
তিনি ইতিমধ্যেই শহরের এক স্কোয়ার মাইল এলাকায় রাতের বেলা কারফিউ ঘোষণা করেছেন।
ট্রাম্প ২০১৬ ও ২০২4 সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সময় যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন—‘অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কার করা হবে’—এটি তারই বাস্তবায়ন। এই কাজ করতে গিয়ে তিনি সেনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জোরালোভাবে ব্যবহার করছেন, যা অনেকের মতে তার স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রমাণ।
একটি সাম্প্রতিক Reuters/Ipsos জনমত জরিপ অনুযায়ী, ৪৮ শতাংশ আমেরিকান মনে করছেন যে “যদি বিক্ষোভ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে, তাহলে সেনাবাহিনী নামিয়ে শান্তি ফিরিয়ে আনা উচিত।”
অন্যদিকে ৪১ শতাংশ এই ব্যাপারে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছেন।