বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজনৈতিক মহলে ফের বড়সড় চমক। দীর্ঘদিনের নীরবতা কাটিয়ে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (বিএনপি) চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আবারও জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন। বুধবার দলের তরফে এই ঘোষণা আসার পর থেকেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রবল আলোড়ন শুরু হয়েছে (Bangladesh)।
স্বাস্থ্যগত কারণে দীর্ঘদিন পর্দার আড়ালে চলে যাওয়া খালেদা জিয়া কয়েকবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন (Bangladesh)। লিভার সিরোসিস, কিডনি সমস্যা, হৃদরোগ এবং আর্থারাইটিস— একাধিক জটিল রোগে ভুগেছেন তিনি। এত সব কিছুর পরেও এবার আবার ভোটের ময়দানে ফিরে আসছেন দেশের প্রভাবশালী এই নেত্রী (Bangladesh)।
‘দ্য ডেইলি স্টার’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল মিন্টো বুধবার জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল এবং তিনি আগামি জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন (Bangladesh)। এমনকি কোন কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হবেন সেটিও জানিয়ে দিয়েছেন মিন্টো। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ফেণী আসন থেকে নির্বাচনে লড়বেন, এবং জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
একই সঙ্গে জল্পনা বাড়ছে আরও একটি সম্ভাবনাকে ঘিরে—বিএনপি চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান লন্ডন থেকে বাংলাদেশে ফিরতে পারেন। যদিও এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কিছু জানানো হয়নি, তবে রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনার পারদ চড়ছে দ্রুতই।
আব্দুল মিন্টো জানিয়েছেন, বিএনপি’র মতে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে তিনি আরও ইঙ্গিতপূর্ণভাবে বলেন, দেশের বর্তমান অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এর আগেও নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। যদি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়, তাহলে সংবিধান অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করাতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে গদিচ্যুত হন শেখ হাসিনা। তার আগে ২০২৩ সালের মে মাসে দীর্ঘ ৪ মাস লন্ডনে চিকিৎসা করিয়ে দেশে ফেরেন খালেদা জিয়া। এর আগে তিনি ২০১৮ সাল পর্যন্ত জেলবন্দি ছিলেন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়। করোনা পরিস্থিতিতে হাসিনা সরকার তাঁকে সাময়িক মুক্তি দেয়। পরবর্তীকালে ২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে তাঁর সাজা মকুব করা হয়।
শেখ হাসিনার পতনের পর, রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিন চুপ্পু খালেদা জিয়ার মুক্তির নির্দেশ দেন। চলতি বছরের মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে দুর্নীতির অভিযোগ থেকেও তাঁকে মুক্তি দেয়।
সব মিলিয়ে, বহু বাধা, অসুস্থতা ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের চাপের মাঝেও খালেদা জিয়ার এই প্রত্যাবর্তনকে ঐতিহাসিক বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। একাধিক উত্থান-পতনের পর এই ভোটে তাঁর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতিপথকে নতুনভাবে প্রভাবিত করতে চলেছে, তা বলাই যায়।