এক চুলের ব্যবধানে প্রাণে বাঁচলেন কেরলের (Kerala nurse) নার্স নিমিষা প্রিয়া। যেমেনে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কথা ছিল আগামীকাল, তবে শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত করা হয়েছে বলে ভারত সরকার সূত্রে খবর। ফলে অস্থিরতা ও চরম উৎকণ্ঠার মধ্যেও মিলল সাময়িক স্বস্তি (Kerala Nurse)।
৩৬ বছর বয়সী নিমিষা প্রিয়া বর্তমানে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় একটি জেলে বন্দি রয়েছেন। তাঁকে (Kerala Nurse) ২০২০ সালে স্থানীয় আদালত এক ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আব্দো মাহদিকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তাঁর সবশেষ আপিলও ইয়েমেনের সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যায় ২০২৩ সালে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে হুতি বিদ্রোহী প্রশাসনের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পরিষদের প্রেসিডেন্ট মাহদি আল-মাশাত নিমিষার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করেন (Kerala Nurse)।
তবে ইয়েমেনের শরিয়া আইনের অধীনে, নিহতের পরিবার যদি রক্তমূল্য বা ‘ব্লাড মানি’ গ্রহণ করে, তাহলে মৃত্যুদণ্ড রদ করা যেতে পারে। নিমিষার তরফে আলোচনাকারী দল মাহদির পরিবারের কাছে এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
এই কঠিন পরিস্থিতিতে ভারতের তরফে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কূটনৈতিক চেষ্টা চালানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়েছে, যাতে আলোচনার সময়সীমা বাড়ানো যায় ও একটি সমঝোতার রাস্তা খোলা থাকে (Kerala Nurse)। সোমবার, ভারতের অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমণি সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিলেন, ‘‘সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছে, তবে অনেক কিছুই আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।’’
এমন এক সময়ে আশার আলো হয়ে এগিয়ে এসেছেন ভারতের প্রখ্যাত সুন্নি মুসলিম ধর্মীয় নেতা ও গ্র্যান্ড মুফতি কান্থপুরম এপি আবুবকর মুসলিয়ার। তিনি ইয়েমেনের ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং আজ ধামারে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন হয় শীর্ষ সুফি পণ্ডিত শেখ হাবিব উমর বিন হাফিজের উদ্যোগে। মাহদির পরিবার এই বৈঠকে উপস্থিত ছিল এবং উমর বিন হাফিজের পরামর্শ শুনেছে বলে পিটিআই সূত্রে খবর।
২০০৮ সালে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে ইয়েমেন পাড়ি দেন নিমিষা প্রিয়া। তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ী মাহদির সঙ্গে অংশীদার হন, কিন্তু পরে সম্পর্কে ফাটল ধরে। অভিযোগ, মাহদির কাছ থেকে নিজের পাসপোর্ট ফেরত পেতে তাঁকে ঘুমের ওষুধ ইনজেকশনের মাধ্যমে দেন নিমিষা, কিন্তু ওষুধের অতিরিক্ত মাত্রায় মাহদির মৃত্যু হয়। পরে তাঁর দেহ কেটে ফেলে দেওয়ার অভিযোগও উঠে, যদিও নিমিষা সেই অভিযোগ অস্বীকার করে আদালতে লড়াই চালান।
ভারতের একাধিক মানবাধিকার সংগঠন এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এই ঘটনার ন্যায়বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। এখন আশার একমাত্র আলো মাহদির পরিবারের ‘ক্ষমা’— এবং সেই আলো আপাতত নিভে যায়নি।