প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের (Joe Biden) ২০২৩ সালের এক সাক্ষাৎকারের অডিও প্রকাশ্যে আসতেই দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ওই অডিওতে শোনা গিয়েছে, বাইডেন (Joe Biden) তখন নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা- যেমন তিনি কবে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন, কিংবা কবে তাঁর ছেলে বো বাইডেনের (Joe Biden) মৃত্যু হয়েছে, সেসব স্মরণ করতে পারছিলেন না। এমনকি, তিনি (Joe Biden) এমন কথা বলছিলেন, যা একটার সঙ্গে অন্যটা সংযুক্ত নয়।
এই সাক্ষাৎকারটি ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট হার এবং তাঁর তদন্তকারী দলের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছিল। বাইডেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ওবামা প্রশাসনের সময়ের গোপন নথিপত্র নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতেই এই সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। রবার্ট হার তাঁর রিপোর্টে বলেন, “ভাল অভিপ্রায় সম্পন্ন এক বৃদ্ধ ব্যক্তি, যার স্মৃতিশক্তি দুর্বল।”
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে রবার্ট হার রিপোর্টে বাইডেনের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ না আনার সিদ্ধান্ত নেন, এবং লেখেন তিনি “একজন সদিচ্ছাসম্পন্ন বৃদ্ধ মানুষ, যার স্মৃতিশক্তি দুর্বল”। এই মন্তব্য নিয়ে তীব্র আপত্তি জানায় হোয়াইট হাউস ও ডেমোক্র্যাটরা। তবে, হার স্বীকার করেন যে বাইডেন সত্যিই কিছু গোপন নথি নিজের কাছে রেখেছিলেন।
অডিও কোথা থেকে ফাঁস, তা স্পষ্ট নয়। ট্রাম্প প্রশাসনের হাত থাকার ইঙ্গিত রয়েছে। সাক্ষাৎকারের লিখিত ট্রান্সক্রিপ্ট ইতিপূর্বেই প্রকাশ করেছিল মার্কিন বিচার বিভাগ, কিন্তু অডিওটি এতদিন প্রকাশ করা হয়নি। বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছিল, আইনি সুরক্ষার কারণে অডিও প্রকাশ করা সম্ভব নয়। কিন্তু সম্প্রতি “Axios” সংস্থা অডিওটি ফাঁস করে। কিছু রিপোর্টে ইঙ্গিত মিলেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প শিবির শুরু থেকেই পুরো সাক্ষাৎকার জনসমক্ষে আনার পরিকল্পনা করছিল।
এই অডিও প্রকাশের পর, বাইডেনের মানসিক সক্ষমতা নিয়ে ডেমোক্র্যাট শিবিরের মধ্যেই তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই অবস্থায় বাইডেনের রাষ্ট্রপতি হিসেবে থাকা অনুচিত ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ ও সহানুভূতি মিলেমিশে রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, “বাইডেনের পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল।” সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, “তিনি স্পষ্টতই প্রেসিডেন্ট পদে থাকার যোগ্য ছিলেন না, তাহলে দেশের আসল নেতৃত্বে ছিলেন কে? কে এই সব গোপন রেখেছিল?”
আরও এক জন লিখেছেন, “২০২৩ সালের অক্টোবরের পর নেওয়া সব সিদ্ধান্ত বাতিল করা উচিত। বাইডেনের তখন দেশ চালানোর ক্ষমতা ছিল না।” তবে, অনেকেই এই ঘটনা শুনে বাইডেনের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। এই অডিও ফাঁস মার্কিন রাজনীতিতে নতুন করে আলোড়ন তুলেছে। ডেমোক্র্যাটরা এখন চাপে পড়েছে। বাইডেনকে সামনে রেখে তাঁরা কতদূর এগোতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।