গাজায় মানবিক ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন শত শত ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি (Israel) সংবাদমাধ্যম হারেৎজ-এর এক প্রতিবেদনে অভিযোগ তোলা হয়েছে, গাজার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে আসা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইসরায়েলি (Israel) সেনাদের। যদিও এই প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন ইসরায়েলের (Israel) প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। এই প্রতিবেদনের তথ্যকে তাঁরা “বাহিনীকে কলঙ্কিত করার জন্য তৈরি করা মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ” বলে অভিহিত করেছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্যানুসারে, গাজায় নতুনভাবে গঠিত Gaza Humanitarian Foundation (GHF) গত এক মাস ধরে ত্রাণ বিতরণ শুরু করার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৫০০-রও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ v।
ফিলিস্তিনি প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, তারা ত্রাণের জন্য এগোতেই ইসরায়েলি (Israel) সেনা বাহিনী তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। যদিও ইসরায়েলি (Israel) সেনা বাহিনী “বেসামরিক নাগরিকদের উপর ইচ্ছাকৃত গুলি চালানোর” অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা এই ঘটনা তদন্ত করছে এবং শুধুমাত্র “হুঁশিয়ারি গুলি” চালানো হয়েছে বলেই দাবি করেছে।
GHF যেসব জায়গায় খাবারের প্যাকেট দিচ্ছে, তার বেশিরভাগই গাজার দক্ষিণাংশে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রাইভেট কন্ট্রাক্টর সংস্থার সহায়তায় পরিচালিত এই ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ত্রাণ সংগ্রহে যাচ্ছেন। কিন্তু সেখানেও মিলছে না নিশ্চিন্ত নিরাপত্তা।
GHF অবশ্য জানিয়েছে, তারা এমন কোনো ঘটনার কথা জানে না, তবে “এমন গুরুতর অভিযোগ উপেক্ষা করা যায় না” বলেই তারা ইসরায়েলকে ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করে ফলাফল প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছে।
শুক্রবার গাজার শিফা হাসপাতালের ডিরেক্টর ড. মোহাম্মদ আবু সেলমিয়া জানিয়েছেন, সেদিন GHF-এর নেতজারিম সাইট থেকে ৮ জন মৃতদেহ এসেছে। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। এছাড়া আরও ২০টি মৃতদেহ হাসপাতাল পেয়েছে বিভিন্ন বিমান হামলার ফলে।
রাফাহর বাসিন্দা মোহাম্মদ ফওজি এপি-কে জানিয়েছেন, “বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত আমাদের উপর গুলি চলে। আমরা খালি বাক্স পেয়েছি, খাবার নয়। অনেকেই আহত ও নিহত হয়েছেন। অবস্থা ভয়াবহ।”
Doctors Without Borders সংস্থা এই পরিস্থিতিকে “একটি গণহত্যা, যা মানবিক সাহায্যের নামে চালানো হচ্ছে” বলে উল্লেখ করে ত্রাণ বিতরণ পদ্ধতির অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস জোর দিয়েছেন, জাতিসংঘের পুরনো, সুরক্ষিত ত্রাণ বিতরণ পদ্ধতিতেই যেন গাজায় ত্রাণ সরবরাহ চালানো হয়। তিনি বলেন, “খাবারের সন্ধানে যাত্রা কখনও মৃত্যুদণ্ড হতে পারে না।”