ইসরায়েল ইরানের (Israel Iran Crash) বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা করেছে কি না, সেই বিষয়ে তারা না স্বীকার করেছে, না অস্বীকার করেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এই বিষয়ে কোনও স্পষ্ট মন্তব্য করতে রাজি হননি। ইরানের এই বুশেহর পারমাণবিক কেন্দ্রটি উপসাগর উপকূলে অবস্থিত এবং এটি দেশের একমাত্র সচল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (Israel Iran Crash)। এই কেন্দ্রটি রাশিয়ার সহায়তায় তৈরি হয়েছে এবং রাশিয়ার কাছ থেকেই ইউরেনিয়াম জ্বালানি আসে। ব্যবহার হয়ে গেলে সেই জ্বালানি আবার রাশিয়া ফিরিয়ে নিয়ে যায়, যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ঝুঁকি না থাকে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বুধবার সাংবাদিকদের জানান, বুশেহরে রাশিয়ার দুই শতাধিক বিশেষজ্ঞ কর্মরত এবং ইসরায়েলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাশিয়ান কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে (Israel Iran Crash)। রাশিয়ার দূতাবাসও জানায়, বুশেহর কেন্দ্র স্বাভাবিকভাবেই কাজ করছে এবং এখনও পর্যন্ত কোনও নিরাপত্তা হুমকি তারা দেখছে না।
অন্যদিকে, উপসাগরীয় দেশগুলি এই পারমাণবিক কেন্দ্রে সম্ভাব্য হামলার কারণে (Israel Iran Crash) জলদূষণের আশঙ্কায় সতর্ক হয়েছে। তারা আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা IAEA-র সঙ্গে মিলে জরুরি পরিস্থিতির জন্য একটি প্রস্তুতি পরিকল্পনা তৈরি করেছে, যদি উপসাগর অঞ্চলের কোনও পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা হয়।
রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আমেরিকা যদি এই সংঘাতে সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ (Israel Iran Crash) করে, তাহলে তার ফল হবে মারাত্মক ও অনির্দেশ্য। তিনি বলেন, বুশেহর পারমাণবিক কেন্দ্রে রাশিয়ান কর্মীরা থাকায় এটি রাশিয়ার জন্য বিশেষ উদ্বেগের বিষয় এবং ইসরায়েলকে অবিলম্বে বুশেহরে হামলা বন্ধ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিশ্ব পারমাণবিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, বুশেহর ইরানের দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত এবং এটি কোনও সামরিক উদ্দেশ্যে নয়, শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি টেহরান থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দূরে এবং রাশিয়ার দেওয়া জ্বালানিতে চলে। জ্বালানি ব্যবহারের পর রাশিয়া ফেরত নিয়ে যায়, যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনও সম্ভাবনা না থাকে।
২০২৫ সালের মার্চে কাতারের প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি বুশেহর কেন্দ্রে হামলা হয়, তাহলে উপসাগরের জল সম্পূর্ণভাবে দূষিত হয়ে যেতে পারে এবং এতে কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কুয়েতের জীবন হুমকির মুখে পড়বে। এই দেশগুলির নিজস্ব মিষ্টি জলের উৎস খুবই কম, এবং তারা মূলত উপসাগরের নোনা জল পরিশোধন করে পানযোগ্য জল তৈরি করে।
রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত পারমাণবিক সংস্থা রোসাটম-এর প্রধান আলেক্সেই লিখাচেভ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যদি বুশেহরের চালু রিঅ্যাক্টরে হামলা হয়, তাহলে তা চেরনোবিলের মতো এক ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে। তিনি বলেন, এই ধরনের কাজ ‘অপকর্মের ঊর্ধ্বে’ এবং ১৯৮৬ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউক্রেনে ঘটে যাওয়া চেরনোবিল দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।