ইরাকের (Iraq) আল-কুট শহরে এক হাইপারমার্কেটে ঘটে গেল মর্মান্তিক বিপর্যয়। স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ এবং পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, পাঁচতলা বিশিষ্ট ‘কর্নিশ হাইপারমার্কেট’-এ ভয়াবহ আগুনে অন্তত ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এখনও ১১ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
রয়টার্সের প্রকাশিত ভিডিও ও তথ্য অনুযায়ী, আগুন লাগার পর রাতভর উদ্ধারকাজ চলে (Iraq)। ফুটেজে দেখা যায়, আগুনে পোড়া ভবনের কালো হয়ে যাওয়া বাইরের অংশ, উদ্ধারকারীদের হাহাকার, এবং ছাদের ওপর থেকে লোকজনকে নামিয়ে আনছে রেসকিউ টিম। অনেকে জীবন বাঁচাতে ছাদে উঠে গিয়েছিলেন। দমকলকর্মীরা (Iraq) তখন আগুনের লেলিহান শিখার সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছিলেন।
সন্ধ্যায় আগুন লাগার সময় বিপণির ভিতরে প্রচুর মানুষ ছিলেন (Iraq), কারণ এটি একটি জনপ্রিয় শপিং স্পট। পুলিশ প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করছে, পারফিউম ও কসমেটিকসের ফ্লোর থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে অনেকেই পালানোর সুযোগ পাননি।
প্রত্যক্ষদর্শী আলি আল-জারগানির বর্ণনায়, “লোকজন দিশেহারা হয়ে ছুটোছুটি করছিল। আমরা পরে ভিতরে ঢুকে দেখি, ছোট ছোট শিশুর দগ্ধ দেহ পড়ে আছে, মহিলাদের পোড়া লাশ চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। হৃদয়বিদারক দৃশ্য ছিল সেটি।”
অন্তত ১৫টি মৃতদেহ এতটাই পুড়ে গেছে যে সেগুলিকে শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ পরীক্ষা প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু লাশ দাফনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা কফিনের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি এই ভয়াবহ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং “যে কোনও অবহেলা বা গাফিলতির উৎস খুঁজে বের করতে হবে” বলেও জানিয়েছেন। তাঁর অফিস এক বিবৃতিতে জাতীয় শোক ঘোষণার কথা জানিয়েছে।
প্রদেশের গভর্নর জানিয়েছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক তদন্তের ফল প্রকাশ করা হবে। ইতোমধ্যেই ভবন এবং হাইপারমার্কেটের মালিকের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের হয়েছে।
এমন ঘটনা ইরাকে নতুন নয়—২০২৩ সালেও এক বিয়ের অনুষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ডে ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা যান। দেশে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা বিধির অভাব যে এখনও কত বড় সংকট, এই ঘটনাই তা ফের প্রমাণ করল।