Shopping cart

TnewsTnews
  • Home
  • Important
  • তেহরান জ্বলছে! ইসরায়েলের রাতভর বিমান হানায় নিহত শতাধিক, যুদ্ধ কি এবার ছড়িয়ে পড়বে?
বিদেশ

তেহরান জ্বলছে! ইসরায়েলের রাতভর বিমান হানায় নিহত শতাধিক, যুদ্ধ কি এবার ছড়িয়ে পড়বে?

iran and israel clash
Email :4

পশ্চিম এশিয়ায় ইসরায়েল (Israel) ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও বিমান আক্রমণে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হয় ইসরায়েলের (Israel)ব্যাপক আক্রমণের মাধ্যমে, যার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানও বড়সড় জবাব দেয়।

শনিবার ইসরায়েল (Israel) সেনাবাহিনী জানায়, তারা ইরানের পশ্চিমাংশ থেকে শুরু করে তেহরান পর্যন্ত আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। এই অভিযানে ৭০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান অংশ নিয়ে গভীর রাতে হামলা চালায়। ইসরায়েলি (Israel) সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন বলেন, “আমরা ইরানের পশ্চিম থেকে তেহরান পর্যন্ত আকাশে আমাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছি। এখন তেহরান আর নিরাপদ নয়।”

ইসরায়েলের (Israel) প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “তেহরান জ্বলবে, যদি ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো বন্ধ না করে।”

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেই প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যে দেশ ইসরায়েলকে সাহায্য করবে—যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্য—তাদের ঘাঁটি ও জাহাজকেও লক্ষ্যবস্তু বানানো হবে।”

১৩ জুন শুক্রবার ইসরায়েল (Israel) “অপারেশন রাইজিং লায়ন” চালু করে। এটি ছিল একটি বিশাল আকাশ অভিযান, যার মাধ্যমে ইরানের পরমাণু ও সামরিক অবকাঠামোতে একযোগে হামলা চালানো হয়। ২০০টির বেশি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান এই অভিযানে অংশ নেয় এবং শতাধিক স্থানে আঘাত হানে। নাতাঞ্জ পরমাণু কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয় এবং ফোর্ডোর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাতেও বড়সড় ক্ষতি হয়।

এই অভিযানে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি, এবং সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরিসহ বহু উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। নয়জন শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীও নিহত হন।

ইরানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই হামলায় অন্তত ৭৮ জন মারা গেছেন এবং ৩২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ। তেহরান, ইসফাহান ও তাবরিজ শহরে ঘরবাড়ি, সামরিক ঘাঁটি ও বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে।

ইসরায়েলের (Israel) এই হামলার পর, ইরান “অপারেশন ট্রু প্রমিস III” নামে পাল্টা প্রতিশোধ শুরু করে। শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে ছোড়া হয়। ইরান দাবি করেছে, তারা কয়েকশো ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। তবে ইসরায়েলের দাবি, ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা ছিল ১০০-এরও কম এবং প্রায় ১০০টি ড্রোন ব্যবহৃত হয়েছে।

তেল আবিবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদর দফতর ‘কিরিয়া কমপাউন্ড’ সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলিকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বেশিরভাগ হামলা ঠেকাতে সক্ষম হলেও, কিছু ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে আঘাত হানে।

এই হামলায় ইসরায়েলের অন্তত তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন বহু মানুষ। রিশন লে-জিওন এলাকায় এক ক্ষেপণাস্ত্র আবাসিক ভবনে সরাসরি আঘাত হানলে দুজন নিহত ও ১৯ জন আহত হন। তেল আবিবের রামাত গান এলাকাতেও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। কিরিয়া কমপাউন্ডেও বড় ধরণের ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

এছাড়াও পশ্চিম তীরে ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠীর ছোড়া এক ক্ষেপণাস্ত্রে তিনজন ফিলিস্তিনি শিশু আহত হয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ জানান, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তাঁকে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন এবং তিনি শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন।

israel iran clash
ইরানের বুকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইসরায়েলের এই হামলা হয়তো ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির পথ খুলে দিতে পারে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলে শান্তিপূর্ণ আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেন, ফরাসি কূটনৈতিকদের কোনও ক্ষতি যেন না হয়।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ইরান ও ইসরায়েলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ইরানের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, ইসরায়েল গোটা অঞ্চলকে অশান্তিতে ঠেলে দিতে চাইছে এবং গাজার গণহত্যা থেকে মন ঘোরাতে চাইছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলে সংঘাত বৃদ্ধির সম্ভাব্য বিপর্যয়কর পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

পোপ লিও চতুর্দশ বলেন, “এই সংকটকালে দায়িত্বশীল আচরণ ও যুক্তিবাদী সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। শান্তিপূর্ণ আলোচনাই পরমাণু হুমকি থেকে মুক্তির একমাত্র পথ।”

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts