২৩ জুন, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন ঘাঁটি কাতারের আল-উদেইদে ঘটে গেল এমন এক ঘটনা, যা বিশ্বজুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে (US Airbase)। স্যাটেলাইট চিত্রে স্পষ্ট দেখা গেছে—ইরানের এক বিস্ফোরক হামলায় ধ্বংস হয়েছে একটি গম্বুজ আকৃতির রাডোম, যার নিচে ছিল মার্কিন বাহিনীর সুরক্ষিত উপগ্রহ যোগাযোগ ব্যবস্থা। যুদ্ধক্ষেত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনাটি দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর গোপন বার্তা আদান-প্রদানের মূল ভরসা ছিল (US Airbase)।
কাতারের রাজধানী দোহা থেকে মাত্র কিছু দূরেই অবস্থিত এই ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের ফিল্ড হেডকোয়ার্টার (US Airbase) হিসেবে কাজ করে এবং মধ্যপ্রাচ্যে তাদের বেশিরভাগ বড় সামরিক অপারেশনের নিয়ন্ত্রণ এখান থেকেই পরিচালিত হয়। ২০১৬ সালে প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ঘাঁটিতে একটি আধুনিক ‘এন্টারপ্রাইজ স্যাটেলাইট টার্মিনাল’ স্থাপন করেছিল মার্কিন বিমান বাহিনী, যার কেন্দ্রবিন্দুতেই ছিল এই রাডোম (US Airbase)।
স্যাটেলাইটে তোলা ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, হামলার দিন সকালে রাডোমটি একেবারেই অক্ষত ছিল (US Airbase)। কিন্তু হামলার দুই দিন পর পরপর তোলা ছবিতে সেই গম্বুজ উধাও, আর পাশে থাকা একটি ভবনের ছাদেও দেখা গেছে আঘাতের চিহ্ন। আশপাশের অন্য কোনো স্থাপনায় গুরুতর ক্ষতি না থাকায়, বিশেষজ্ঞদের ধারণা এটি ছিল একটি নিশানাভেদী হামলা, সম্ভবত একটি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোনের মাধ্যমে চালানো হয়েছিল।
এখনো পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র বা কাতার সরকার এই হামলা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। অথচ ইরানের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা আহমাদ আলামোলহোদা দাবি করেছেন—এই হামলায় ঘাঁটির সামরিক যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে এবং মার্কিন কমান্ড কার্যক্রমে মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর ভাষায়, “ঘাঁটিটি একেবারে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।”
এই হামলা এসেছে এমন এক সময়, যখন এর আগে আমেরিকা (US Airbase) তেহরানে ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল। সেটা ছিল ইরান-ইসরায়েল ১২ দিনের সংঘর্ষের একটি মোড় ঘোরানো অধ্যায়। আল-উদেইদ ঘাঁটিতে হামলার পরই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়—যা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে সাময়িকভাবে শান্ত করলেও, ভবিষ্যতের জন্য রেখে যাচ্ছে অসংখ্য প্রশ্ন।
অন্যদিকে, তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলাকে হালকাভাবে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ইরান আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছিল যে হামলা আসছে, তাই আমেরিকা ও কাতার প্রস্তুতি নিতে পেরেছিল, এবং হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, যোগাযোগব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানে শুধু একটি ঘাঁটি নয়—পুরো রিজিওনাল সামরিক পরিকল্পনায় বড়সড় ঘাটতি।
এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—সত্যিই কি মার্কিন ঘাঁটির যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে গেছে? কেন এতটা গোপনীয়তা? স্যাটেলাইটে যা ধরা পড়েছে, তা কি বড় কোনো সামরিক দুর্বলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে?