ইরানের (Iran) পরমাণু শক্তি সংস্থা (Atomic Energy Organisation of Iran) রবিবার কড়া ভাষায় নিন্দা করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেই হামলার, যেখানে ইরানের (Iran) তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্র—ফোর্ডো, নতাঞ্জ এবং ইসফাহান—লক্ষ্য করে ভয়ঙ্কর বোমা বর্ষণ চালানো হয়।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিতে এই সংস্থা (Iran) বলেছে, “শত্রুদের এই বর্বরোচিত ষড়যন্ত্র ইরানের জাতীয় পরমাণু শিল্পকে রুখতে পারবে না। এই শিল্পের ভিত গড়া হয়েছে আমাদের পরমাণু শহিদদের রক্তে, এবং কোনও চক্রান্তই আমাদের অগ্রগতি থামাতে পারবে না।”
তারা (Iran) আরও দাবি করেছে, এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে এবং মানবতার বিরুদ্ধে একটি অপরাধ। সংস্থাটি আশ্বাস দিয়েছে, তেহরান তার পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাবে, দেশ গঠনের স্বার্থে কোনওভাবেই সেই পথ থেকে বিচ্যুত হবে না।
এর আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান (Iran) হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ইজরায়েলের নবম দিনের টানা বোমাবর্ষণ যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে ইরানের প্রতিশোধ আরও ভয়ঙ্কর হবে। “আমরা আমাদের পরমাণু অধিকার কোনও অবস্থাতেই ছাড়ব না,” স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ-র সঙ্গে ফোনালাপে পেজেশকিয়ান (Iran) বলেন, “ইজরায়েল সমস্ত আন্তর্জাতিক আইন ভেঙে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। আমরা আন্তর্জাতিক কাঠামোর মধ্যেই শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি চালাতে আগ্রহী, তবে কারও হুমকির মুখে আমাদের অধিকার ছেড়ে দেব না।”
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলাকে “বিস্ময়কর সামরিক সাফল্য” বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর দাবি, “ফোর্ডো, নতাঞ্জ এবং ইসফাহান সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।” একইসঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “শান্তি না চাইলে ইরানের অন্য লক্ষ্যেও আরও বড় হামলা আসবে।”
এই হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (Iran) বড় বড় শহরে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ইজরায়েলও তাদের আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে, কারণ পাল্টা হামলার আশঙ্কা বাড়ছে প্রতি মুহূর্তে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, “মার্কিনরা এর চেয়েও বড় ক্ষতির জন্য প্রস্তুত থাকুক।” খামেনেইয়ের প্রতিনিধি হোসেইন শারিয়তমাদারি আরও বলেন, “এখন আমাদের পালা। বিলম্ব নয়—প্রথমেই বাহরাইনে মোতায়েন মার্কিন নৌবহরে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে হবে আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্সের জাহাজের জন্য।”
ইরানের অভ্যন্তরে এখন মার্কিন হামলার পর দ্রুত এবং কঠিন পাল্টা জবাবের জন্য চাপ বাড়ছে। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল আশঙ্কা করছে, পরিস্থিতি যে কোনও সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।