মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু স্থাপনাগুলিতে হামলার পর এবার পাল্টা জবাব দিল ইরান (Iran Attacks)। কাতারের রাজধানী দোহার কাছে অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি ‘আল-উদেইদ’ লক্ষ্য করে মিসাইল হামলা চালিয়েছে তেহরান (Iran Attacks)। ইতিমধ্যেই একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ইরান, যেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি মিসাইল ইরানের এক উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে ছুটে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। যদিও ইরান কোন ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে তা এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
এই সামরিক অভিযানের নাম দিয়েছে ইরান— ‘অপারেশন বশারাত ফাতেহ’। ইরান দাবি করেছে, তারা হামলা (Iran Attacks) করেছে কাতারের দোহায় অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি ‘আল-উদেইদ’-এ। যদিও এই হামলায় কোনও প্রাণহানি ঘটেনি বলে জানা গেছে। কাতারের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে গিয়েছিল হামলার ঠিক আগেই। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইরান আগেই কাতারকে এই হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছিল।
ইরানের (Iran Attacks) সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “এই অভিযানে যতগুলি মিসাইল ব্যবহার করা হয়েছে, তার সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ব্যবহৃত বোমার সমান। কৌশলগতভাবে এমন ঘাঁটি বেছে নেওয়া হয়েছে, যা কাতারের জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে দূরে, যাতে সাধারণ মানুষের ক্ষতি না হয়।”
ইরানের (Iran Attacks) বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (Revolutionary Guards Corps) এই হামলার দায়িত্ব নিয়েছে। তবে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কাতার সরকার। কাতারের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেছেন, “আল-উদেইদ ঘাঁটিতে হামলা কাতারের সার্বভৌমত্ব, আকাশসীমা এবং আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। আমরা এই ঘটনার কড়া নিন্দা করছি।”
এই হামলার একদিন আগেই, যুক্তরাষ্ট্র ইতিহাসে প্রথমবার সরাসরি ইরানের মাটিতে সামরিক অভিযান চালায়। ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামের এই অভিযানে টার্গেট করা হয় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলি— ফরদো, নাটানজ ও এসফাহান।
প্রায় ৩৭ ঘণ্টার ফ্লাইট শেষে সাতটি বি-২ স্পিরিট বোমার বাহিনী রাত ২টা ১০ মিনিট (ইরান সময়) বা ৬টা ৪০ মিনিট (ইস্টার্ন টাইম) নাগাদ ফরদো পারমাণবিক কেন্দ্রে আঘাত হানে। এই প্রথমবার ব্যবহৃত হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক GBU-57 Massive Ordnance Penetrator (MOP) বোমা— যা শুধুমাত্র B-2 বোমারবাহী বিমানেই ফিট করা সম্ভব। এরপর একে একে আরও দুটি পারমাণবিক কেন্দ্রেও আঘাত হানা হয়। মোট ১৪টি এমওপি বোমা ফেলা হয় তিনটি লক্ষ্যবস্তুর উপর।
এই ঘটনার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে ফের উত্তেজনার পারদ চড়েছে। কূটনৈতিক মহলের মতে, এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলতে পারে।