আমেরিকার দক্ষিণ ফ্লোরিডায় ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিশু চিকিৎসক (পেডিয়াট্রিশিয়ান) নেহা গুপ্তা (Indian Origin Mother) (৩৬)–কে তার ৪ বছর বয়সী মেয়েকে খুন করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে মিয়ামি-ডেড কাউন্টির শেরিফ অফিস। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি তার শিশুকন্যাকে হত্যা করে ঘটনাটিকে একটি দুর্ঘটনাজনিত পানিতে ডুবে যাওয়ার ঘটনা হিসেবে সাজানোর চেষ্টা করেছিলেন (Indian Origin Mother) ।
ঘটনাটি ঘটে ২৭ জুন ভোররাতে, যখন নেহা গুপ্তা (Indian Origin Mother) ৯১১ নম্বরে ফোন করে জানান, তাদের ভাড়ার ছুটির বাড়ির পুলে তার মেয়ে ডুবে গেছে। এই ঘটনার সময় মা ও মেয়ে মিয়ামির এল পোর্টাল নামক গ্রামে অবকাশ যাপন করছিলেন।
জরুরি কল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তারা চার বছর বয়সী ছোট্ট আরিয়া তালাথিকে পুল থেকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে CPR দেন এবং পরে মিয়ামির জ্যাকসন মেমোরিয়াল হাসপাতালের রাইডার ট্রমা সেন্টারে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন (Indian Origin Mother) ।
নেহা গুপ্তা তদন্তকারীদের বলেন, তারা সন্ধ্যায় সৈকতে সময় কাটিয়ে রাত ৯টা নাগাদ খাওয়া-দাওয়া করে, তারপর রাত সাড়ে ১২টার দিকে একসাথে মাস্টার বেডরুমে ঘুমাতে যান। তিনি দাবি করেন, রাত ৩টা ২০ মিনিটে পেছনের উঠান থেকে অস্বাভাবিক শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে যায়। উঠান ঘুরে দেখতে গিয়ে দেখেন, আরিয়া পুলে পড়ে রয়েছে। প্রায় ১০ মিনিট ধরে তিনি চেষ্টা করেন মেয়েকে বাঁচানোর, তারপর ৯১১-এ ফোন করেন।
প্রথমে ঘটনাটি একটি দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বলে মনে হলেও, অটোপসির রিপোর্টে বেরিয়ে আসে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২৯ জুন মিয়ামি-ডেড মেডিক্যাল এক্সামিনারের দফতর আরিয়ার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করে জানায়, শিশুটির ফুসফুস ও পেটে পানির কোনো অস্তিত্ব নেই— অর্থাৎ এটি ডুবে মৃত্যুর ঘটনা নয়।
এই প্রতিবেদন সামনে আসার পর পুলিশ নিশ্চিত হয়, এটি একটি সাজানো হত্যাকাণ্ড। পরবর্তীতে জানা যায়, নেহা গুপ্তা ও তার প্রাক্তন স্বামীর মধ্যে সন্তানের হেফাজত নিয়ে মামলা চলছিল এবং মেয়েটির বাবা জানতেনই না যে মা ও মেয়ে একসাথে ওকলাহোমা থেকে মিয়ামি এসেছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম CBS জানায়, গুপ্তা যেখানে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন— ওকলাহোমার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে— সেখান থেকে তাঁকে ৩০ মে-তে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং রোগীদের চিকিৎসা করা থেকেও বিরত রাখা হয়েছে।
আদালতের দাখিলকৃত নথি অনুযায়ী, নেহা গুপ্তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মেয়েকে হত্যা করে পরে ঘটনাটি পুলে ডুবে যাওয়ার মিথ্যা নাটক তৈরি করেন, যাতে হত্যার প্রমাণ লোপাট করা যায়। বর্তমানে তিনি পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন এবং মিয়ামি-ডেড কাউন্টিতে প্রথম ডিগ্রির হত্যার অভিযোগে বিচার মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষায় আছেন।