আমেরিকার সরকারে এখন বহু ভারতীয়-আমেরিকান গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন—তার মধ্যে আছেন এফবিআই ডিরেক্টর কাশ প্যাটেল-ও (Indian Origin)। কিন্তু তবুও মার্কিন সমাজে ছড়িয়ে থাকা বিদ্বেষ যেন কমছে না; বরং ভারতীয়দের প্রতি বিরূপ মনোভাব দিন দিন স্পষ্টভাবে বাড়ছে। সম্প্রতি এই দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হয়ে ওঠে যখন কাশ প্যাটেল ‘দীপাবলি’র শুভেচ্ছা জানিয়ে এক সাধারণ পোস্ট করেন। সেই পোস্টের নিচে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভেসে আসে পরপর ঘৃণায় ভরা মন্তব্য—কারও লেখা, “নিজের দেশে ফিরে যাও, তোমাদের বালুর দৈত্যদের পূজা করো।” আরও কেউ লিখেছে (Indian Origin), “এটা আমেরিকা, এখানে এসব চলবে না।” জনসমক্ষে এমন বর্ণবিদ্বেষী, ধর্মবিদ্বেষী মন্তব্য আমেরিকার সোশ্যাল মিডিয়া যেন নতুন করে নোংরা করে দিল।
কাশ প্যাটেলের পাশাপাশি দীপাবলির শুভেচ্ছা জানানোয় একইভাবে আক্রমণের শিকার হন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বিবেক রামাস্বামী, এবং এখনও দায়িত্বে থাকা অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল হারমিত ঢিল্লন (Indian Origin)। শুধু ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টই নয়—হোয়াইট হাউস, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, এমনকি টেক্সাস ও আরকানসাসের গভর্নরের তরফে দেওয়া দীপাবলি পোস্টেও একই ঘৃণার বন্যা।
বিবেক রামাস্বামী (Indian Origin) যখন রিপাবলিকানদের উদ্দেশে বলেন, “আমরা কারও গায়ের রং বা ধর্ম দেখি না, চরিত্রই আসল পরিচয়”—তখনও তাকে নিশানা করে বিদ্বেষ তৈরি হয়। অনেকে বলে, “ইন্ডিয়ানরা আছে বলেই আমরা ঘৃণা অনুভব করি।” বিষয়টি নিয়ে ডানপন্থী রাজনৈতিক মুখপাত্র দিনেশ ডিসুজাও স্তম্ভিত—তিনি বলেন, “চল্লিশ বছরের ক্যারিয়ারে এই ধরনের বর্ণবাদ আমি ডান শিবিরে কখনও শুনিনি। কেউ না কেউ এই ভাষাকে বৈধতা দিচ্ছে।”
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন যখন বিভিন্ন ধরনের ইমিগ্রেশনে কড়াকড়ি করছে, বিশেষ করে H-1B ভিসার ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম আরোপ করছে, তখন ‘মেগা’ সমর্থক দলের একাংশ আরও সরাসরি বলতে শুরু করেছে যে, “আমেরিকা কেবল শ্বেতাঙ্গ খ্রিস্টানদের জায়গা”—এমন মন্তব্য প্রকাশ্যে উঠে আসছে (Indian Origin)।
গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেট’-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, গত এক বছরে X (টুইটার)-এ ভারতীয়দের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী মন্তব্য, ট্রলিং ও হেট ক্যাম্পেইন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ভারতীয়-আমেরিকানরা দেশের অর্থনীতি, প্রযুক্তি, চিকিৎসা ও প্রশাসনে বিশাল অবদান রাখলেও, সমাজের একাংশে অনলাইন ঘৃণার বিস্তার যেন থামার নামই নিচ্ছে না।
আমেরিকায় রাজনৈতিক মেরুকরণ যত বাড়ছে, ততই সামনে আসছে প্রশ্ন—এই দেশে সত্যিই কি সব ধর্ম, সব বর্ণ, সব সংস্কৃতির জন্য সমান জায়গা আছে? নাকি নতুন আমেরিকা ধীরে ধীরে এক সংকীর্ণ, বিভাজিত পরিচয়ের দিকে এগোচ্ছে?











