চিন সফরে (India China relation) গিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর স্পষ্ট বার্তা দিলেন বেজিংকে—গত ৯ মাসে ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ‘ভালো অগ্রগতি’ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখন সময় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC) বরাবর ‘ডি-এস্কেলেশন’-এর। সোমবার চিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জয়শঙ্কর বলেন, “আমাদের সম্পর্কের গতিপথ এখন ইতিবাচক, কিন্তু তা বজায় রাখতে হলে সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে হবে এবং পারস্পরিক আস্থা তৈরি করতে হবে (India China relation) ।”
এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় সেইদিনই, যেদিন জয়শঙ্কর সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO)-এর বৈঠকে যোগ দিতে চিনে (India China relation) পা রাখেন। আলোচনার শুরুতেই তিনি বলেন, “ভারত-চিন সম্পর্ককে দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত। পার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু তা যেন কখনও দ্বন্দ্বে রূপ না নেয়, প্রতিযোগিতা যেন সংঘাতে পরিণত না হয়।”
তিনি (India China relation) আরও বলেন, “২০২৪ সালের অক্টোবরে কাজানে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাক্ষাতের পর থেকেই ভারত-চিন সম্পর্ক ধীরে ধীরে ইতিবাচক পথে এগোচ্ছে। আমাদের দায়িত্ব সেই গতি বজায় রাখা।”
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের গালওয়ান উপত্যকার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর দুই দেশের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে ঠেকেছিল। সেই প্রেক্ষাপটে জয়শঙ্করের চিন সফর এবং এই বার্তা কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা (India China relation) ।
বৈঠকে জয়শঙ্কর স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে পেরেছি বলেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ধাপে ধাপে স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে এখন আরও কিছু পদক্ষেপের সময় এসেছে, যার মধ্যে রয়েছে সীমান্ত এলাকা থেকে সেনা সরানো এবং উত্তেজনা প্রশমনের মতো গুরুতর বিষয়।”
পাশাপাশি, দু’দেশের মধ্যে মানুষে-মানুষে যোগাযোগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোরও উপরেও জোর দেন তিনি। “যদি মানুষে-মানুষে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়, তাহলে সহযোগিতার সুযোগও বাড়বে। আর এ ক্ষেত্রে যদি বাণিজ্যিক অবরোধ বা সীমাবদ্ধতা থাকে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত।”
তিনি আরও বলেন, “ভারত ও চিন এই অঞ্চলের দুই বড় শক্তি। তাই আমাদের সম্পর্ক শুধু আমাদের দুই দেশের পক্ষে নয়, গোটা বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সম্পর্ক পরিচালিত হওয়া উচিত পারস্পরিক সম্মান, স্বার্থ ও সংবেদনশীলতা বজায় রেখে।”
শেষে জয়শঙ্কর আবারও মনে করিয়ে দেন, ভারত ও চিন একে অপরের প্রতিযোগী হলেও তা যেন কখনও সংঘর্ষে না পৌঁছয়। এই নীতির ভিত্তিতেই ভবিষ্যতে সম্পর্ক আরও উন্নত হতে পারে।